নাটোরের বড়াইগ্রামে নয় বছরের এক শিশু ধর্ষণ হওয়ার পর তার ডাক্তারি রিপোর্টে অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। চিকিৎসক একই রিপোর্টের একদিকে যেমন লিখেছে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে খাবারের জন্য দিয়েছেন উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এন্টিবায়োটিক ও ব্যাথানাশক ঔষধ। পাশাপাশি লেখা রয়েছে শিশুটির মানসিক অবস্থা খারাপ। ধারণা করা হচ্ছে, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক প্রভাবিত হয়ে ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি মর্মে উল্লেখ করেছেন।
চিকিৎসকের দেয়া এই রিপোর্টের ফলে ধর্ষণের শিকার মেয়েটি ও তার পরিবার ন্যায় বিচার না পাবার আশঙ্কা করছে।
মামলা ও শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বনপাড়া পৌরশহরের পূর্ব হারোয়া এলাকার চাঁন প্রামাণিকের ছেলে এবারের এসএসসি পরীক্ষার্থী মাহবুর রহমান (১৬) গত ২৪ জানুয়ারী দুপুর ১২টার দিকে সম্পর্কে ভাতিজি প্রতিবেশী ওই শিশুটিকে বাই সাইকেল চালানো শিখাতে প্রথমে বাড়ির উঠোনে ও পরে চকলেট দিবে বলে ঘরের ভিতর ডেকে আনে। এ সময় মাহবুরের বাড়িতে কেহ ছিলো না এবং এ সুযোগে সে শিশুটিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ ঘটনা কেহ জানলে মেরে ফেলার হুমকীও দেয় সে। পরবর্তীতে বাড়ি ফিরে আসলে তাকে অসুস্থ দেখালে মার জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে শিশুটি ঘটনা খুলে বলে। শিশুটির পিতা এঘটনায় বাদী হয়ে রাতে বড়াইগ্রাম থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ মাহবুরকে আটক করে জেল হাজতে পাঠায় এবং শিশুটির মেডিকেল পরীক্ষা করানোর জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক ডা. ডলি রাণীর কাছে প্রেরণ করে। ডা. ডলি ওই রাতেই মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন করলেও রহস্যজনক কারণে রিপোর্ট প্রদান করেন ৫ দিন পর। এদিকে ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে ও একই সাথে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দানের লক্ষে আদালত গত ৩০ জানুয়ারী আসামী মাহবুরকে ২৪ দিনের জন্য অন্তবর্তী কালীন জামিন মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই তহছেনুজ্জামান জানান, আসামী এর আগেও ওই শিশুটিকে একবার জোর পূর্বক ধর্ষণ করেছে বলে স্বীকার করেছে।
ডা. ডলি রাণীকে রিপোর্টের এই অসঙ্গতি বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন সদত্তুর দিতে পারেননি। বুধবার সকালে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একাধিক কর্মচারী জানান, সাংবাদিকরা ধর্ষণের শিকার শিশুটির মেডিকেল পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন করায় তিনি টেনশনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
এদিকে জামিনকৃত আসামী ও তার পরিবারের সদস্যরা মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকী ও একই সাথে মোটা অংকের টাকা অফার করছে বলে অভিযোগ করেছেন মামলার বাদী শিশুটির পিতা। কিন্তু তিনি জানান, অপরাধীর সাথে কোন আপোষ নাই, তার কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত।
ধর্ষক মাহবুর বনপাড়া সেন্ট যোশেফস স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্র ও শিশুটি একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক সেকশনের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার