মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার উপর দিয়ে মঙ্গলবার বিকালে কালবৈশাখী ঝড় বয়ে গেছে। কালবৈশাখী তাণ্ডবে রাজৈরের ৩ ইউনিয়নে ঘর-বাড়ি, গাছপালা ও ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্থ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে হঠাৎ করে কালবৈশাখী ঝড় শুরু হয়। ১৫ থেকে ২০ মিনিট ঝড়ের তাণ্ডবে রাজৈর উপজেলা কদমবাড়ি, সাতপাড় (রাজৈর অংশ) ও খালিয়া ইউনিয়নের শতাধিক কাঁচা-পাকা ঘর-বাড়ি, শত শত গাছ, দোকান-পাট এবং কাঁচা-পাকা ধান ও পাটের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে কদমবাড়ি ইউনিয়নে। এ ইউনিয়নের বিদ্যুতের বেশকিছু খুঁটি উপড়ে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কদমবাড়ি বাজারের বহু দোকান-পাট বিধ্বস্ত হয়েছে। কদমবাড়ি বাজার থেকে মৃধাবাড়ি পর্যন্ত টেকেরহাট-কদমবাড়ি সড়কের প্রায় ৪ কিলোমিটার ব্যাপী রাস্তার দু‘পাশের শত শত বর্ষীয়ান গাছ ভেঙ্গে ও উপড়ে পড়েছে। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে রাজৈর-কদমবাড়ি যোগাযোগ ব্যবস্থা। ঝড়ের সময় কদমবাড়ি বাজারে গাছের ডাল ভেঙ্গে ও ঘরের চালের নিচে পড়ে ২ জন আহত হয়েছে।
এ সকল ইউনিয়নের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঝড়ের তাণ্ডবে কাঁচা-পাকা ইরি-বেরো ধানের ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি চলতি মৌসুমের শত শত একর বোনা পাটের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও ব্যাপক। মৃধাবাড়িতে গাছ পড়ে একটি সার্বজনীন কালীমন্দির, দুলাল মন্ডলের মন্দির, সুভাষ হালদারের বসতবাড়ি, তাপস মন্ডলের বসতবাড়ি, ললিত বাছারের বসতঘর, মনিমোহন বাড়ৈ, নরোত্তম বিশ্বাস, সৃষ্টি গাইন, নিরান সরদারের বসতঘরসহ অর্ধশতাধিক ঘরবাড়ি ও কদমবাড়ি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এলাকার কৃষকরা জানান, তাদের কয়েকশ' একর পাকা ধানের যে ক্ষতি হয়েছে তা পুষিয়ে ওঠা সম্ভব নয়। তাৎক্ষণিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা সম্ভব না হলেও তাদের ধারণা ক্ষতির পরিমাণ দেড়কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।
রাজৈর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান জানান, তাৎক্ষণিকভাবে গাছগুলি সড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমান এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না। পরবর্তীতে কৃষকদের যথাসম্ভব সহায়তা করা হবে।
এ ব্যাপারে রাজৈর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান শান্তি রঞ্জন দাস বলেন, ‘ঝড়ের সংবাদ শুনে আমি তাৎক্ষনিকভাবে এলাকা পরিদর্শন করেছি। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় সম্পূর্ণ এলাকায় যেতে পারিনি। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে কাঁচা-পাকা ইরি-বোরো ধান মাটির সাথে মিশে গেছে। সরে জমিন নিরূপন না করে ক্ষতির পরিমান বলা সম্ভব নয়। তবে ক্ষতির অবস্থা দেখে মনে হয় কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে।’
বিডি প্রতিদিন/১৭ এপ্রিল ২০১৮/হিমেল