টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার পরবর্তী জেরা গ্রহণের জন্য আগামী ৯ মে দিন ধার্য করেছেন আদালত।
বুধবার দুপুরে টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আবুল মনসুর মিয়া এ দিন ধার্য করেন।
এর আগে, মামলার প্রধান আসামি টাঙ্গাইল-৩(ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার উপস্থিতিতে আদালতে মামলার বাদী নাহার আহমেদের জেরা শুরু করা হয়। প্রায় এক ঘণ্টার মতো জেরা করেন আসামী পক্ষের আইনজীবীরা।
বেলা ১২টার দিকে বিচারক আবুল মনসুর মিয়া আদালতের এজলাসে বসেন। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষ তিনজন সাক্ষীর হাজিরা দাখিল করেন।
মামলার বাদী ও নিহত মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদের স্ত্রী নাহার আহম্মেদ গত মাসের ২১ তারিখে তার অসমাপ্ত সাক্ষ্য প্রদান করেন। পরে আদালতের নিয়ম অনুযায়ী আসামীপক্ষের আইনজীবীরা মামলার মূল বাদীকে জেরা করার দিন ধার্য হয় ১৮ এপ্রিল। দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মামলার বাদী ও নিহত মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদের স্ত্রী নাহার আহম্মেদকে জেরা শুরু হয়। পরে জেরা অসমাপ্ত থাকতেই আদালতের বিচারক আজকের দিনের কার্যক্রম মূলতবি ঘোষণা করেন এবং পরবর্তী জেরা ও অন্যান্য সাক্ষীর দিন ৯ মে দিন ধার্য করেন। এর আগে গত ১১ ফেব্রুয়ারি বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণের মধ্য দিয়ে চাঞ্চল্যকর এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
এর আগে অসুস্থ্যতার কারণে আমানুর রহমান খান রানা এমপিকে আদালতে হাজির না করায় ৪ বার এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ পেছানো হয়। অতিরিক্ত সরকারি কৌশুলী মনিরুল ইসলাম খান জানান, রাষ্ট্রপক্ষ থেকে মামলার বাদী নিহত ফারুক আহমেদের স্ত্রী নাহার আহমেদ, ছেলে আহমেদ মজিদ সুমন ও মেয়ে ফারজানা আহমেদ মিথুনের হাজিরা দেয়া হয়। কারাগারে আটক আসামী আনিসুল ইসলাম রাজা, মোহাম্মদ আলী ও মো. সমিরকে আদালতে হাজির করা হয় এবং জামিনের থাকা অপর তিন আসামী মাসুদুর রহমান, ফরিদ আহম্মেদ ও নাসির উদ্দিন নুরু আদালতে হাজির হয়।
এদিকে গাজীপুর কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে এ হত্যা মামলার প্রধান আসামী টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানাকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে হাজির করা হয় আদালতে। আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুল বাকি মিয়া।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ পৌর এলাকার কলেজপাড়া তাঁর বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিনদিন পর তাঁর স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১৪ সালের আগস্টে গোয়েন্দা পুলিশের তদন্তে এই হত্যায় এমপি রানা ও তার ভাইদের নাম বের হয়ে আসে। ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় গোয়েন্দা পুলিশ। এই মামলায় এমপি রানা ছাড়াও তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পাসহ ১৪ জন আসামি রয়েছে। গত ৬ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত।
বিডি-প্রতিদিন/১৮ এপ্রিল, ২০১৮/মাহবুব