ঈদের টানা ছুটিতে রাঙামাটিতে নামছে পর্যটকের ঢল। পাহাড় জুড়ে পর্যটকদের ঠাসা ভিড়। বিনোদন কেন্দ্রগুলো লোকে লোকারণ্যে ভরপুর। দূর-দূরান্তে হাজারো পর্যটকের পদচারণায় এই যেন অন্যরকম রাঙামাটি। সব মিলে পাহাড় যেন উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে। তাই রাঙামাটির হোটেল মোটেল ও কটেজগুলো এখন বেশ জমজমাট।
রাঙামাটি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক সৃজান বিকাশ বড়ুয়া বলেন, রাঙামাটি শহরের সবকটি আবাসিক হোটেল, মোটেল, সরকারি রেস্ট হাউসে লোকজনের ভিড়। কোথাও রুম খালি থাকছে না। লেগে রয়েছে অগ্রিম বুকিংও। ঈদ উৎসব আর রাঙামাটির নৈসর্গিক আবেশ আর দর্শনীয় স্থান ও নিদর্শনগুলো পর্যটকদের আকর্ষণ কাড়ে সহজেই। তাই প্রতিবছর সব উৎসবে রাঙামাটিতে পর্যটকদের আগমন বাড়ে কয়েকগুন। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
অন্যদিকে শরৎ এর আগমনে নতুন রূপে সেজেছে প্রকৃতি। আর এ প্রকৃতির টানে যান্ত্রিক জীবনের ক্লান্তি দূর করতে হ্রদ, পাহাড় আর ঝর্ণার সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে রাঙামাটি আসছে হাজার হাজার পর্যটক। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে আগত পর্যটকরা রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতু, শুভলং ঝর্ণা, ডিসি বাংলো পার্ক ও কাপ্তাই-আসামবস্তী সড়কসহ বিভিন্ন বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ কাপ্তাই হ্রদ নৌ-ভ্রমণের আনন্দ উচ্ছ্বাসে মেতেছে। আবার কেউ প্রকৃতিকে উজাড় করে দিচ্ছে সমস্ত ভাললাগা। বিকালের গোধুলীর রং যখন লাল বর্ণ ধারণ করে, তখনি ভিড় জমে পর্যটন ঝুলন্ত সেতুতে। আর এসব পর্যটকদের সাহায্য-সহায়তায় সর্বাধিক পাশে তাকে ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্যরা।
রাঙামাটি ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্য মো. কামাল উদ্দীন জানান, দেশি-বিদেশী পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে আমরা সব সময় প্রস্তুত। ঈদের পর রাঙামাটিতে প্রায় প্রতিদিন পর্যটক আসছে। তাই তাদের নিরাপত্তা দিতে আমাদের কর্ম ব্যস্ততা বেড়েছে। শুধু ঈদ কিংবা পূজা নয়, রাঙামাটিতে পর্যটকদের জৌলুস থাকে সারা বছরই।
রাঙামাটি পর্যটক কমপ্লেক্সের বানিজিক্য কর্মকর্তা সূর্য্য সেন ত্রিপুরা জানান, রাঙামাটির সুবলং ঝর্ণা, পর্যটন কমপ্লেক্স, আসামবস্তি সড়ক, প্যাদা টিং টিং, বরগ্যাং ও ফুরামন পাহাড়ের মত অসংখ্য পর্যটন কেন্দ্রেই পর্যটকদের আকর্ষণ থাকে বেশি। প্রতিদিন গড়ে ২ থেকে ৩হাজার পর্যটক আসছে রাঙামাটিতে।
এ ব্যাপারে রাঙামাটিতে বেড়াতে আসা পর্যটক মো. মোদাচ্ছের জানান, এক কথায় অপরূপ সৌন্দর্যে ভরপুর রাঙামাটি। এখানে চলে পাহাড়, নদী আর হ্রদের মিলন মেলা। এখানকার প্রতিটি পরতে পরতে লুকিয়ে আছে অদেখা ভুবন।নয়নাভিরাম দৃশ্যপট। না আসলে কোন দিন কল্পনা করা যেতনা। তবে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের আরও আন্তরিক হতে হবে। কারণ সংষ্কার কিংবা সংরক্ষণ না করলে কোন সৌন্দর্য্য ধরে রাখা সম্ভব না। আর বৈচিত্র্য হারিয়ে গেলে পর্যটকও আসবে না। তাই পর্যটন কেন্দ্রগুলো ঢেলে সাজানোার প্রয়োজন।
বিডি-প্রতিদিন/ ই-জাহান