নেত্রকোনা শহরে তিন দিনে তিন শিশু নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। অবশেষে বুধবার সকল শিশু উদ্ধারের পর স্বস্তি ফিরে আসে। ফিরে পাওয়া শিশুদের মুখ থেকে বেরিয়ে আসে তাদের বাড়ি ছাড়ার মূল কারণ। পড়াশুনা চাপ-বকুনি থেকে বাঁচতে ঘর ছাড়ে তারা।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ তারিখ রাতে মোক্তারপাড়া নিজ এলাকা থেকে প্রথম নিখোঁজ হয় নাফিস তানভীর নফি। এরপর কাটলি এলাকার রিফাত হাসান জয়। তারা দুই বন্ধু। নাফি শহরের হলি চাইল্ড একাডেমির পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র অপরজন ক্রিয়েশান কিন্ডারগার্টেনের। পরবর্তীতে উধাও হয় জামিয়া হুসাইনিয়া মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সামিউল আলম।
শিশু জয় শহরের কাটলি এলাকার মো. রফিকুল ইসলামের ছেলে, নাফি মোক্তারপাড়া মসজিদ কোয়াটার এলাকার কামাল হোসেনের ছেলে ও সামিউল সাতপাই পশ্চিমপাড়ার মৃত আব্দুল্লাহ’র ছেলে।
একে একে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার প্রেক্ষিতে চালানো অভিযানে শিশুরা পুলিশের হাতে উদ্ধার হয়। নাফিকে ঢাকার এয়ারপোর্ট এবং জয়কে শহরের রেলস্টেশন থেকে উদ্ধার করা হয়। এদের মধ্যে সামিউল বর্তমানে ঢাকা এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশে হেফাজতে রয়েছে। তাকে নেত্রকোনায় আনার পক্রিয়া চলছে। উদ্ধার হওয়া শিশুদের হাতে থাকা চিরকুট, মোবাইল নাম্বার নিয়ে বেরিয়ে আসে ঘর থেকে পালানোর ঘটনা।
শিশুরা জানায়, বিদ্যালয়ে অনেক বই, প্রাইভেটে অতিরিক্ত পড়ার চাপ ও মা-বাবার বকুনিতে ঘর ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে বেরিয়ে পড়ে তারা। খেলার সময় পায় না বিদ্যালয়ে প্রথম হওয়ার চাপে।
এ ব্যাপারে নাফির বাবা কামাল হোসেনের সাথে কথা বললে, তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
মায়ের সাথে কথা বলতে চাইলে চাইলে বলেন, বাচ্চাকে নিয়ে বাবার বাড়ি বেড়াতে গিয়েছে।
নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) এর দায়িত্বে থাকা পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম আশরাফুল আলম সাংবাদিকদের জানান, বাচ্চাদের ব্যাপারে বাবা মাকে আরও সচেতন হতে হবে। স্কুলগুলোতেও পড়াশোনার ব্যাপারে মানবিক হতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা