আগামী ১০ মার্চ প্রথম দফায় নাটোরের ৬টি উপজেলার মধ্যে সদর উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। এই উপজেলায় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম রমজান, ভাইস চেয়ারম্যান পদে আব্দুল্লাহ আল সাকিব বাকী ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে কামরুন্নাহার কাজল আগেই বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছে। অপর যে পাঁচ উপজেলায় প্রথম দফায় নির্বাচন হবে সেগুলো হলো বাগাতিপাড়া, লালপুর, বড়াইগ্রাম,গুরুদাসপুর ও সিংড়া উপজেলা। এসব
উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে ১৪ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৮ জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ১০ জন। এসব উপজেলায় নৌকা প্রার্থীর গলার কাঁটা হয়েছেন দলের বিদ্রোহীরা।
অভিযোগ উঠেছে, স্থানীয় সাংসদদের সমর্থন নিয়ে তারা প্রার্থী হওয়ায় প্রচারণায় বেপরোয়াভাব দেখাচ্ছেন। তবে জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিদ্রোহী প্রার্থীর বিষয়টি তারা কেন্দ্রে জানিয়েছেন। এছাড়া ৭ সদস্যের একটি কমিটি করে বিষয়গুলো সুরাহার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এবারের উপজেলা নির্বাচনে সিংড়া উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে সর্বোচ্চ ৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বী করছেন। এই ৫ জনের মধ্যে বিদ্রোহী ২ জন সহ আওয়ামী লীগের ৩ জন, ওয়াকার্স ও জাকের পার্টির একজন করে প্রার্থী রয়েছেন। এরা হলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিক। বিদ্রোহীরা হলেন বিএনপি থেকে ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগে যোগদানকারী
বিএনপি নেতা আদেশ আলী ও গোলাম কবির। অপর দুজনের একজন ওয়াকার্স পার্টির উপজেলা সভাপতি মিজানুর রহমান মিজান ও জাকের পার্টির সভাপতি মাহফুজুর রহমান। এছাড়া লালপুরে ২ জন প্রার্থীর একজন আওয়ামী লীগের এবং অপরজন জাসদ (ইনু) সমর্থিত।
অপর তিনটি উপজেলার মধ্যে গুরুদাসপুরে ২ জন বিদ্রোহীসহ আওয়ামী লীগের তিনজন এবং বড়াইগ্রাম ও বাগাতিপাড়ায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হিসেবে একজনকরে প্রার্থী হয়েছেন। এসবের মধ্যে বাগাতিপাড়া উপজেলায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী সেকেন্দার রহমানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের ছোট ভাই অহিদুল ইসলাম গকুল। গুরুদাসপুরে আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রাথী হয়েছেন সাংসদ আব্দুল কুদ্দুসের পালিত পুত্র খ্যাত জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক আনোয়ার হোসেন এবং অপর বিদ্রোহী প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক সরকার এমদাদুল হক মোহম্মদ আলী। বড়াইগ্রামে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবলু।
আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের অভিযোগ, স্থানীয় সংসদ সদস্যের ইন্ধনে বিদ্রোহীরা নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের বিরুদ্ধে ঘোষণা দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে প্রচার করায় আচরণ বিধির অভিযোগ উঠলে নির্বাচন কমিশন থেকে সাংসদকে এলাকা থেকে চলে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়।
অপরদিকে সাংসদ শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, তিনি তার ছোট ভাই গকুলকে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের জন্য বার বার চাপ দিয়েছেন। কিন্তু এলাকার সাধারণ ভোটারসহ দলীয় নেতা কর্মীদের চাপের মুখে তার ভাই প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেননি। তবে চাপাচাপির মধ্যে সব প্রার্থী শেষ মহুর্তে জোরে শোরে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
রির্টানিং অফিসার ও অতিরিক্তি ড.রাজ্জাকুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় সাংসদদের বিরুদ্ধে পাওয়া অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া তাদেরকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। নির্বাচন সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে প্রার্থীসহ সকলের সহযোগীতা কামনা করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ