জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ৫১তম ব্যাচের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের হোসেনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্র ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা।
রবিবার (২২ জুন) রাত সাড়ে ৮ টার দিকে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। এর আগে, ওইদিন সকালে সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান জুবায়ের।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গত শনিবার জোবায়ের জন্য অ্যাম্বুলেন্স চেয়ে জাবির চিকিৎসা কেন্দ্রে আবেদন জানালে তারা দেরিতে একটি এম্বুলেন্স পাঠান। তারা মূলত চিকিৎসা কেন্দ্রের কর্মকর্তাদের দায়িত্বে অবহেলাসহ অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তোলেন।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের কয়েকজন জানান, জুবায়ের গত শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান। পরে তিনি গুরুতর অসুস্থতার কথা জানিয়ে ক্যাম্পাসে ফেরার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে যোগাযোগ করেন। তবে চিকিৎসাকেন্দ্র থেকে তাকে অ্যাম্বুলেন্স নষ্ট, ঢাকায় পাঠানো যাবে না বলে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়। এর প্রায় ৪ ঘণ্টা পর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি এম্বুলেন্স গেলে তিনি ক্যাম্পাসে ফেরেন। পরে ভোর রাতে তার পেটে ব্যথা শুরু হলে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। একপর্যায়ে তিনি মারা যান। জানা যায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে হিমোফিলিয়া রোগে আক্রান্ত ছিলেন।
ঘেরাও কর্মসূচির সমন্বয়ক ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিল আলী বলেন, শনিবার সন্ধ্যা ৭ টার দিকে জুবায়ের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাকে কল দিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এসময় জুবায়ের তার বুকে প্রচণ্ড ব্যথা করছে, তিনি ক্যাম্পাসে ফিরতে চান বলে জানান। কিন্তু এম্বুলেন্সের জন্য জাবি মেডিকেলে অনেক বার কল দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি বলে জানান। প্রায় ৪ ঘণ্টা পরে একটি এম্বুলেন্স তাকে নিয়ে আসে। মূলত চিকিৎসা কেন্দ্র কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব অবহেলা এবং অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে এ আন্দোলন বলে জানান শাকিল। তারা মেডিকেলে এম্বুলেন্স সংখ্যা বাড়ানোসহ চিকিৎসা সেবা উন্নত করার দাবি জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চিকিৎসা কেন্দ্রের প্রধান কর্মকর্তা মো. শামসুর রহমান বলেন, 'জুবায়ের অসুস্থ, এটা মেডিকেলের সবাই জানে। যখনই তিনি এম্বুলেন্স চেয়েছেন, তখনই পেয়েছেন। তবে গতকাল তিনি যখন এম্বুলেন্স চান, তখনই দেওয়া সম্ভব হয়নি। এর কারণ, এম্বুলেন্স স্বল্পতা। বর্তমানে মেডিকেলে ৩টি এম্বুলেন্স সচল রয়েছে। ওইসময় সচল এম্বুলেন্সগুলো বাইরে ছিল। পরে এম্বুলেন্স পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জুবায়েরের জন্য পাঠানো হয়েছিল। এতে আমাদের কিছু করার ছিল না।'
এদিকে ওইদিন রাত সাড়ে ১০ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. একেএম রাশিদুল আলমের আশ্বাসে ঘেরাও কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন শিক্ষার্থীরা।
বিডি প্রতিদিন/মুসা