গ্রাম বাংলা থেকে যাত্রা-পালাগান এবং সার্কাসের মতো বিনোদনের মাধ্যমগুলো প্রায় হারিয়ে যেতে বসেছে। আর এমন সময় দিনাজপুরের বিরল উপজেলার বাজনাহার-ধুকুরঝাড়ী পশু মেলায় ব্যতিক্রমী সার্কাস দেখতে আসা মানুষের উপচে পড়া ভীড় ভাল লক্ষণ। প্রায় ৭০ বছরের পুরাতন এই মেলায় যেন কর্মব্যস্ত মানুষ ফিরে পেয়েছেন বিনোদনের সুষ্ঠ খোড়াগ। যে বিনোদনে নেই কোন অশ্লিলতা।
এর আগে মেলা’র নামে চলেছিল যাত্রা ও সার্কাসের নামে অশালিন নাচ-গান আর জুয়া এবং মাদকের ছড়াছড়ি। মেলাগুলোতে স্ব-পরিবারে আনন্দ উপভোগ করা যায়নি। এখন পরিবারকে সাথে নিয়ে মেলা দেখার পরিবেশ তৈরী হয়েছে। তাই বিভিন্ন বয়সী মানুষ স্ব-পরিবারে উপভোগ করছেন সার্কাসসহ নানান খেলা। ধুকুরঝাড়ী পশু মেলায় বগুড়া থেকে আগত ঐতিহ্যবাহী রাজমনী সার্কাস। এই মেলার সার্কাসে পুরুষ থেকে নারী দর্শকের সংখ্যা অনেক বেশী।
মেলার সার্কাসে রয়েছে শতাধীক খেলোয়াড়। যেখানে রয়েছে শিশু থেকে নানা বয়সী খেলোয়াড়। শারীরিক কষরত, ভারসাম্য ফ্লাইং রাইড, ঝুলন্ত-উড়ন্ত নানা ধরণের খেলা। তারের উপর দিয়ে হেটে যাওয়া, খাঁচার ভিতর মটরসাইকেল চালনাসহ বিভিন্ন শ্বাস রুদ্ধকর খেলা দেখিয়ে থাকে খেলোয়াড়রা। আরও রয়েছে হাতি, ঘোড়া, গাধা আর রাম ছাগলসহ নানা জীব-জন্তুর উপভোগ করার মতো সুন্দর সুন্দর খেলা। এখানে তারকা শিল্পীরা এসে গ্রাম বাংলার সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে, অভিনয় করে এবং গান গেয়ে শোনায়। যা দর্শকদের আনন্দ দেয়।
দিনাজপুর সদর থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে বিরলের ধুকুরঝাড়ী নামক স্থানে এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
মেলা কমিটির সভাপতি ও ধামইর ইউপি’র বর্তমান চেয়ারম্যান মোসলেম উদ্দীন জানান, সকলের সহযোগিতায় মিলে মিশে গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে এ মেলার আয়োজন করেছি। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন মেলায় অশ্লিলতাসহ মাদক, জুয়াকে বৃদ্ধাঙ্গগুলি দেখিয়ে স্ব-পরিবারে মেলা দেখার ও বিনোদন উপভোগ করার মতো পরিবেশ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছি। ধর্মীও উৎসব, ঈদ, কুরবানী, দুর্গা পুজার সময় যেভাবে জামাই মেয়েসহ আত্মীয়রা বেড়াতে আসে, ঠিক তেমনই এ মেলায় প্রতি পরিবারের ধুম পরে যায়। এবারেও আমরা সেটা ফিরিয়ে আনতে পেরেছি।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ