নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত নারায়ণগঞ্জের বন্দরের প্রবাসী ওমর ফারুকের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এসময় নিহতের লাশ দেখতে যান নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ড. সেলিনা হায়াৎ আইভী।
বুধবার ২৭ মার্চ সকাল ১০ টায় বন্দর সিরাজউদ্দৌলা ক্লাব মাঠে জানাজা শেষে বন্দর কবরস্থানে তার দাফনের কাজ সম্পন্ন করা হয়। এসময় জানাজা নামাজে ওমর ফারুকের পরিবারের স্বজনরা ছাড়াও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী এতে অংশ নেন।
জানা গেছে, নিউজিল্যান্ডে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে মঙ্গলবার রাতে দেশে আনা হয় নিহত ওমর ফারুকের লাশ। এয়ারপোর্ট থেকে লাশ গ্রহণ করেন নিহতের স্বজনেরা।
এদিকে বুধবার সকালে মরদেহ বাড়ির সামনে রাখা হলে এলাকবাসী ও দূর-দূরান্ত থেকে তার বন্ধুবান্ধব এবং স্বজনেরা বাড়িতে এসে ভীড় জমান শেষবারের মতো ওমর ফারুকের মুখটি দেখতে। জানাজার আগ মুহূর্তে কফিনের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়েন ওমর ফারুকের মা রহিমা বেগম, তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী সানজিদা জামান নিহা ও তিন বোনসহ শোকার্ত স্বজনরা।
সকাল সাড়ে নয়টায় জানাজার উদ্দেশে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় সিরাজদৌলা মাঠে। দশটায় জানাজা শেষে পৌনে এগারোটায় দাফন সম্পন্ন হয় বন্দর কবরস্থানে। সেখানে ছেলেবেলার বন্ধুরা ও এলাকাবাসী ওমর ফারুকের স্মৃতিচারণ করে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
জানাজায় অংশ নেন বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান মুকুল, সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুলতান আহম্মেদ, কাউন্সিলর হান্নান সরকার, বন্দর থানার ওসি রফিকুল ইসলাম সহ স্থানীয় বিশিষ্টজনরা।
জানাজার পর পরিবারের স্বজনদের সমবেদনা জানাতে বাড়িতে ছুটে যান মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। এসময় তিনি নিউজিল্যান্ডের এ ঘটনাকে অনাকাঙ্খিত বলে গণমাধ্যমের কাছে উল্লেখ করেন।
নিহত ওমর ফারুকের স্ত্রী সানজিদা জাহান নিহা বলেন, আমার স্বামীকে তো আর ফিরে পাবো না। কোনো ভাবেই তার শূন্যতা পূরণ হবার নয়। সে ছিল পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি। তাকে হারিয়ে এই পরিবারে আমি, আমার বৃদ্ধা শাশুড়ি এবং অবিবাহিত একটি ননদ নিঃস্ব হয়ে গিয়েছি।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ মার্চ শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ আল-নূর মসজিদে জুম্মার নামাজের সময় বন্দুকধারী সন্ত্রাসীর গুলিতে ৫০ জন নিহত ও ৪৭ জন আহত হন। এ ঘটনায় পাঁচ বাংলাদেশির মধ্যে ওমর ফারুক একজন। নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার রাজবাড়ি এলাকার ওমর ফারুক ২০১৫ সালে নিউজিল্যান্ডে পাড়ি জমান।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন