একের পর এক ছাত্রের শরীরে ৭১টি বেত্রাঘাত। বেত্রাঘাত সহ্য করতে না পেরে কখনো ছাত্রটি শিক্ষকের পায়ে, কখনো হাতে আবার কখনো আম্মু-বাবা করে চিৎকার করছিল। কিন্ত মন গলেনি ওই শিক্ষকের। গুরুতর আহত ছাত্রটিকে পরে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে নারায়ণগঞ্জ শহরের চেঞ্জেস স্কুল নামের ইংরেজি মাধ্যম একটি স্কুল।
হোমওয়ার্ক করে না আনায় ওই স্কুলের ৭ম শ্রেণীর ছাত্র সৈকত কুমার পালকে ৭৩টি বেত্রাঘাত করে আহত করা হয়েছিল। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চেঞ্জেস ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকরা আলোচনার মাধ্যমে অভিযুক্ত শিক্ষক নাজমুলকে বহিষ্কার করেছে।
জানা গেছে, ১৬ এপ্রিল দুপুরে চেঞ্জেস স্কুলের চাঁদমারী ক্যাম্পাসে আইসিটি বিষয়ে হোমওয়ার্ক করে না আনায় ৭ম শ্রেণীর ছাত্র সৈকত কুমার পালকে ৭১টি বেত্রাঘাত করে আহত করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় আহত শিক্ষার্থীকে তার শহরের খানপুর সরকারি হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়।
নাম প্রকাশেষ অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা জানায়, এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও অভিযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু স্কুল কতৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।
তারা আরো জানায়, ঘটনার দিন ছাত্র সৈকতের ওপর যে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয় তা দেখে সহপাঠীরাও চোখের জল ধরে রাখতে পারেনি। এ ঘটনার পর নাজমুলের সহশিক্ষকরা তাকে সতর্ক করলেও সে উল্টো হুংকার দেয় তার পেছনে শক্তিশালী লোকেরা আছে। তার কিছু হবে না।
আহত শিক্ষার্থী সৈকত কুমারের বাবা সুরিথ কুমার পাল জানান, ওই শিক্ষক হয়তো মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তি। কারণ, কোন সুস্থ মানুষ এমন কাজ করতে পারে না। তবে স্কুল কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে আমি সন্তুষ্ট। তাই এখন আর অন্য কোন স্টেপে যাবো না।
স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক জিএম ফারুক জানান, ‘আমাদের স্কুল যখন ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ওই সময় থেকেই আমাদের বাচ্চাদের গায়ে হাত তুলে শাসন করতে শিক্ষকদের নিষেধ করা হয়। এই নিষেধাজ্ঞা থাকার পরেও কালকের এই ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক।
জিএম ফারুকের ভাষ্যমতে, আগামীতে কোন শিক্ষক যাতে কোন শিক্ষার্থীর প্রতি এ ধরণের মারমুখি আচরণ না করে, সে জন্যই তাৎক্ষণিক ওই শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার