সুন্দরবনে শুটকি আহরণ মৌসুম শেষে জেলে-ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফুটেছে। অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত শুটকি আহরণ মৌসুমে বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বনদস্যুদের উৎপাত না থাকায় বঙ্গোপসাগর উপকূলে সুন্দরবনের দুবলার চরসহ ৬টি চরের শুটকি পল্লীর প্রায় ১৫ হাজার জেলে অধিক পরিমাণ মাছ আহরণ করেছে।
এবারের মৌসুমে অন্য বছরের তুলনায় শুটকি আহরণ অনেক বৃদ্ধি পাওয়ায় পূর্ব সুন্দরবন বিভাগে শুটকি থেকে ৫৬ লাখ টাকার বেশি রাজস্ব আয় হয়েছে। বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন রাজস্ব বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সুন্দরবন বিভাগ জানায়, বঙ্গোপসাগর উপকূলে সুন্দরবনের দুবলার চরসহ আলোরকোল, মেহেরআলীর চর, মাঝের কেল্লা, নারকেল বাড়িয়া ও শেলারচরে এবার অস্থায়ী শুটকি পল্লীর জন্য ১ হাজার ২৫টি জেলে ঘর, ৪৮টি ডিপো ঘর, ৭৯টি অস্থায়ী দোকান ও ৭টি ভাসমান দোকানের অনুমতি দেয়া হয়। এবার জেলেদের জালে প্রচুর পরিমাণ মাছ আহরিত হওয়ায় অধিক পরিমাণ শুটকি উৎপাদিত হয়েছে।
মৌসুম শেষে শুটকি খাত থেকে বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ রাজস্ব আয় করেছে ২ কোটি ৪৪ লাখ ৮৫ হাজার ৬৮০ টাকা। গত মৌসুমে রাজাস্ব আদায় হয়েছিল ১ কোটি ৮৮ লাখ ৮০ হাজার ৪৩৯ টাকা। গত মৌসুম থেকে এবছর অনেক বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে।
সুন্দরবনে শুটকি আহরণ মৌসুমে জেলেরা বঙ্গোপসাগর থেকে লইট্যা, ছুড়ি, চ্যালা, ভেটকি, কোরাল, চিংড়ি, রূপচাঁদা, কঙ্কন, মেদসহ বিভিন্ন প্রকার সামুদ্রিক মাছ আহরণ করে চাটাই ও মাচায় শুকিয়ে শুটকি তৈরি করে। জেলেরা শুটকি পল্লীতে বসেই তাদের তৈরি শুটকি দাদন ব্যাসায়ী মহাজনদের কাছে বিক্রি করে দেয়। কেউ আবার নিয়ে এসে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে।
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, এবারের শুটকি আহরণের সময় বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বনদস্যুদের কোনো উৎপাত না থাকায় জেলেরা অনেক বেশি মাছ আহরণ করতে পেরেছে। বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কঠোর নজরদারিতে রাজস্ব আয় বেড়েছে। রাজস্ব আয়ে আমাদের লক্ষমাত্রাও অর্জিত হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন