কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় সালিশী বৈঠকে আব্দুল খালেক (৭৫) নামের এক বৃদ্ধকে ডেকে নিয়ে জুতাপেটা করে বিষ খাইয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় খালেক মিয়ার ছেলে সোহেল চৌধুরী বাদল বাদী হয়ে বাঙ্গরা বাজার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকে মাতাব্বর ফুল মিয়া গা-ঢাকা দিয়েছেন। উপজেলার রামচন্দ্রপুর উত্তর ইউনিয়নের বাখরাবাদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আব্দুল খালেক মিয়ার স্ত্রী আছিয়া বেগম বলেন, আমার মেয়ে মিনুয়ারা বেগমের ছেলে রাব্বি ও পাশের বাড়ির ব্যবসায়ী আবুল কাশেমের মেয়ের সাথে প্রায় তিন বছর পূর্বে বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে তিন মাসের একটি সন্তান রয়েছে। কাশেম গত রবিবার দুপুরে তার মেয়েকে বি-বাড়িয়া জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার উজানচর শ^শুর বাড়ি থেকে আনতে গেলে তার শ্বশুর অসুস্থ থাকায় তাদের পুত্রবধূকে দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এতে কাশেম ক্ষিপ্ত হয়ে তাদেরকে পর দিন দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে আসে। কাশেম এলাকায় ফিরে ওইদিন সন্ধ্যায় গ্রাম পুলিশ রহিমের মাধ্যমে রাব্বির নানা খালেক মিয়াকে রামচন্দ্রপুর এলাকার স্থানীয় মাতব্বর হাজী ফুল মিয়ার বাড়িতে ডেকে নেয়। কাশেম মিয়ার মেয়েকে তার শ্বশুর বাড়িতে নির্যাতন করা হচ্ছে এমন অভিযোগে সেখানে তাকে জুতা পেটাসহ শারীরিক ভাবে নির্যাতন করা হয়। পরদিন সোমবার সকাল ৯টায় খালেক মিয়াকে আবারও ডেকে নিয়ে পুনরায় মারধর করে জোরপূর্বক রোযা থাকা অবস্থায় চা পান করায়। সেখান থেকে বাড়ি ফিরে সকাল ১০টার দিকে খালেক মিয়া অসুস্থ হয়ে পড়েন।
বাড়ির লোকজনকে তিনি জানান, তাকে জোর করে চায়ের সাথে কী যেন খাইয়ে দিয়েছে। পরিবারের লোকজন তাকে হাসপাতালে নেয়ার পূর্বেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
অভিযুক্ত আবুল কাশেমের বাড়িতে গিয়ে না পেয়ে তার মোবাইলফোনে অনেক বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
ফুল মিয়া হাজী তার বাড়িতে সালিশের বিষয়টি স্বীকার করলেও মারধর ও বিষ খাওয়ানোর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, কাশেমের মেয়েকে না দেওয়ার বিষয়টি বিচার আসলে খালেক মিয়াকে ডেকে এনে তার নাতী বৌকে বাবার বাড়িতে পাঠানোর কথা বলি। সোমবার সকালে আমি ঢাকা চলে আসি।
এ ঘটনায় বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, সালিশে মারধরের মোটামুটি নিশ্চিত হতে পেরেছি। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে মারধরের ঘটনার অপমান সইতে না পেরেই বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করেছে। বিষয়টি তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার