প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও কাজ সমাপ্ত হয় না। কবে শেষ হবে সেতু নির্মাণের কাজ তাও জানা নেই। প্রায় ১৯ বছর ধরে নির্মাণের কাজ দেখে আসছেন স্থানীয়রা। তবে এটি ব্যবহার করতে পারব কি না তা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে টেকনাফের স্থানীয় বাসিন্দাদের।
উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা বলেন, ঠিকাদারের গাফলতির কারণে সেতুটি কয়েকবার সময় বাড়ানো হলেও এখন পর্যন্ত নির্মাণকাজের প্রায় ২০ শতাংশ বাকি রয়েছে। এরমধ্যে ওই প্রকল্পটি মেয়াদও শেষ হয়ে গেছে। একাধিকবার নিম্নমানের কাজের অভিযোগে নির্মাণ কাজও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সেতুটির সংযোগ সড়কের ১১০ মিটার কাজ এখনও বাকি রয়েছে।
এলজিইডি কার্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৬-১৭ অথবছরে এলবিসি প্রকল্পে সেতুর নকশা, বরাদ্ধ এবং ব্যয় বাড়িয়ে দরপত্রের আহ্বান করা হয়। ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকার কাজটি বরাদ্দ পান কক্সবাজারের মের্সাস আসাদ এন্টারপ্রাইজ নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্টান। সেতু লম্বায় ৩৫ মিটার ও প্রস্থ ৩ মিটার। এরসঙ্গে সংযোগ সড়কটি ১১০ মিটার ও প্রস্থ ৩ মিটার। নির্মাণের শেষ সময় ছিল ২০১৭ সালের ১৯ ডিসেম্বর। কয়েক দফায় সময় বাড়ানো হলেও এরমধ্যে সেতুটির নিমাণ কাজ শেষ করা যায়নি।
পরিসংখ্যানে জানা যায়, সেতুটির অবস্থান টেকনাফ পৌরসভার লামারবাজার মসজিদ সংলগ্ন কায়ুকখালী খালের ওপর। প্রথমটি টেকনাফ-কক্সবাজারের আঞ্চলিক মহাসড়কের আলো শপিং কমপ্লেক্স এলাকায়, দ্বিতীয়টি নাফ সীমান্ত হোটেল সংলগ্ন এবং তৃতীয়টির টেকনাফ লামারবাজার মসজিদ সংলগ্ন এলাকায়। উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের চাপ কমাতে ২০০১ সালে নেদারল্যান্ড সরকারের আর্থিক সহায়তায় কায়ুকখালীখালের ওপর বিকল্প তৃতীয় সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছিল। এটি পূর্ব-পশ্চিম লম্বা। সেতুটি প্রথমে ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্টান মেসাস শহিদ এন্টারপ্রাইজ কাজ শুরু করে খালের দুই পাশে বড় দুটি দেওয়াল নির্মাণের পর কাজ বন্ধ করে দেন। ২০০৪-০৫ অর্থবছরে আবার দরপত্র আহবানের পরে কাজ শুরু না করায় সেটিও বাতিল হয়। ২০০৭-০৮ অর্থবছরে তৃতীয়বারে মতো ৭০ লাখ ১৬ হাজার ৭৮৫ টাকার দরপত্র আহ্বান করলে মেসার্স চকোরি ডকুমেন্টারি সোসাইটি কাজটি পায়। কিন্তু তারাও নিদিষ্ট সময়ে নির্মাণকাজ শুরু না করায় সেটিও বাতিল করা হয়। তবে চতুথ দফায় কাজ শুরু করা হলেও যথাসময়ে বিকল্প সেতুর নির্মাণ শেষ না হওয়ায় এখন টেকনাফ শহরে আসা লোকজন ও পৌরবাসীকে নানান ধরনের দুর্ভোগ পৌহাতে হচ্ছে।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল খালিদকে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে কবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, থেমে থেমে কাজ চলছে। দৈনিক ৩-৪ জন শ্রমিক কাজ করছেন। এরমধ্যে সময়সীমা দুই দফা বাড়ানো হলেও শেষ হয়নি সেতুর কাজ। আরও ২০শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এলজিইডির একজন কর্মকর্তা বলেন, ২০১৯ সালে জুন মাসে ওই প্রকল্প শেষ হয়ে গেছে। অথচ কায়ুকখালীয়াখালের তৃতীয় বিকল্প সেতুটি নির্মাণকাজ এখনও শেষ হয়নি। একাধিকবার অনিয়মের অভিযোগে কাজ বন্ধ করা হলেও এলজিইডির লোকজন চলে আসলে তাঁরা গোপনে কাজ করছেন। প্রতিষ্ঠানটি এখনও সংযোগ সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু করতে পারেনি। বিষয়টি উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। সিদ্ধান্ত এলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আনিসুর রহমান বলেন, সেতুটি নিয়ে কর্তৃপক্ষ বিপাকে রয়েছে। এখনও অনেক কাজ বাকি আছে। সেগুলো আদায় করার জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল