৫ জানুয়ারি, ২০২০ ১৩:০১

মেঘনায় অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে মানববন্ধন

বিলীন গ্রামের পর গ্রাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

মেঘনায় অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে মানববন্ধন

ইজারাকৃত বালুমহাল ছেড়ে অন্য এলাকায় ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় গ্রামের পর গ্রাম নদীগর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করার দাবিতে এলাকায় মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন চালিভাঙা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল লতিফ, ছাত্রলীগ নেতা আব্দুস সালামসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ।

ভাঙনের ভয়াবহতা তুলে ধরে মেঘনা উপজেলার রামপ্রসাদের চর, নলচর, ফরাজীকান্দি ও মৈশারচর গ্রামের বাসিন্দারা জানান, মেঘনা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ইউএনও, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারসহ বিভিন্ন দফতরে বাড়িঘর রক্ষার আবেদন করলেও বন্ধ হয়নি বালু উত্তোলন। প্রতিদিন নদীর পেটে যাচ্ছে আবাদি জমি ও বসতভিটা। এর আগে এলাকাবাসীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, চালিভাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যানসহ এলাকার গণ্যমান্যদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও নদীভাঙনের ভয়াবহতা নিজ চোখে দেখেন। তিনি এর প্রতিকার চেয়ে ভূমিমন্ত্রী, ভূমি সচিব, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও কুমিল্লা জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেন।

এতে উল্লেখ করেন, ২ নম্বর ভাসানিয়া দড়িচর মৌজায় নলচর মেঘনা নদীর ভরাটিয়া বালুমহাল এবং ৬ নম্বর সেনেরচর ও ১ নম্বর সাপমারা চরেরগাঁও বালুমহাল দুটি মেসার্স ফরহাদ ট্রেডার্সকে ইজারা দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটি লিজ পাওয়া নির্ধারিত বালুমহালে বালু উত্তোলন না করে ২ নম্বর ভাসানিয়া দড়িচর মৌজা ও ৬ নম্বর সেনেরচর মৌজায় ভূমিহীনদের জন্য বন্দোবস্ত দেওয়া জমি এবং সাধারণের আবাদি জমি ৪০-৫০টি ড্রেজার দিয়ে কেটে ফেলেছে। এভাবে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলতে থাকলে রামপ্রসাদের চর, নলচর, ফরাজীকান্দি ও মৈশারচর গ্রাম মেঘনা উপজেলার মানচিত্র থেকে মুছে যাবে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ১০ বছরের বেশি সময় ধরে বসতবাড়ি-আবাদি জমি রক্ষায় সরকারের বিভিন্ন দফতর থেকে আদালত পর্যন্ত দৌড়াচ্ছেন তারা। এলাকাবাসীর রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওই বালুমহালের ওপর উচ্চ আদালত নিষেধাজ্ঞাও দেয়। কখনো বালুমহালের নাম বদলে ইজারা, কখনো ইজারা এলাকার বাইরে গিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে বন্ধ হয়নি মানুষের ভোগান্তি। এলাকাবাসী জানান, এরই মধ্যে বসতভিটা হারিয়ে পথে নেমেছে রামপ্রসাদের চর গ্রামের ২৪১ পরিবার। ২৯৭ পরিবার হারিয়েছে আবাদি জমি। নদীতে বিলীন হয়ে গেছে দুটি মসজিদ, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ প্রায় ২৫০ একর ভূমি। নলচর, ফরাজীকান্দি গ্রামেরও শত শত একর আবাদি জমি ও বাড়িঘর হারিয়ে গেছে।

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর