সন্তানের গলার রশি টেনে টেনে প্রতিদিন এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে ভিক্ষার জন্য ছুটে যান এক অসহায় মা। বিষয়টি অমানবিক হলেও তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসেনি কেউ। এভাবেই দিনের পর দিন ওই অসহায় মা জীবিকা নির্বাহ করেন।
তবে প্রতিবন্ধী ছেলের চিকিৎসা করাতে চান তিনি। একই সঙ্গে প্রতিবন্ধী ছেলের মাথা গোঁজার ঠাঁই নিশ্চিত করে যেতে চান এই মা। এজন্য সবার সহযোগিতা চেয়েছেন নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌরসভার শৈলাডহর গ্রামের প্রতিবন্ধী জাকির হোসেনের মা জামেনা খাতুন।
জানা গেছে, দুর্গাপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে মা জামেনা খাতুন তার ছেলে প্রতিবন্ধী ছেলে জাকিরের গলায় রশি বেঁধে ভিক্ষা করেন। তাদের বাড়িঘর নেই। অন্যের বাড়িতে বসবাস করেন তারা। প্রতিদিন এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে ছুটে যান বেঁচে থাকার তাগিদে। ভিক্ষা করে যা পান তা দিয়ে চলে তাদের সংসার।
জাকিরের মা জামেনা খাতুন বলেন, প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মেছে জাকির। টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারিনি। স্বামীর মৃত্যুর পর চলতে পারছিলাম না আমরা। এজন্য সন্তানের গলায় রশি বেঁধে ভিক্ষা করতে নামি। ভিক্ষা করে যা পাই তা দিয়ে মা-ছেলে খেয়ে বেঁচে আছি। মাঝেমধ্যে রশি ছিঁড়ে ছুটে যায় জাকির। তখন পাগল বলে মানুষে মারধর করে। আমি মরে যাওয়ার পর ছেলের কি হবে তা নিয়ে চিন্তিত। ছেলের চিকিৎসার জন্য সবার সহযোগিতা চাই আমি।
দুর্গাপুর সার্কেলের এএসপি মাহমুদা শারমিন নেলী বলেন, বিষয়টি শুনেছি। খুবই অমানবিক ঘটনা। আমরা সাধ্যমতো অসহায় মা-ছেলের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করব। যে বয়সে ছেলেটি মায়ের দায়িত্ব নেয়ার কথা সে বয়সে মাকেই ছেলের দায়িত্ব বহন করতে হচ্ছে। সবাই এগিয়ে এলে দুর্দশা কেটে যাবে তাদের।
দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারজানা খানম বলেন, জাকির হোসেনকে প্রতিবন্ধী ভাতা দেয়া হয়। আমি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিকিৎসার জন্য কিছুটা সাহায্য করেছি। আমরা জাকির ও তার মাকে সরকারি সহযোগিতা দেয়ার চেষ্টা করব।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত