দিনাজপুরে বিএনপির দলীয় গ্রুপিং, কোন্দল আর সমন্বয়হীনতার কারণে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি সাড়ে ৩ বছর হলেও জেলা কমিটি হয়নি।
২০১৬ সালের আগস্টে জেলা বিএনপির ১২৯ সদস্যের জেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। কিন্তু বড় পরিসরে আহ্বায়ক কমিটি হলেও এখনো জেলা বিএনপি কমিটি গঠন করতে পারেনি। বরং জেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ জেড এম রেজওয়ানুল হক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে ওই পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। তাই আহ্বায়ক কমিটিতেই এখন ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক হয়েছেন সাবেক এমপি রেজিনা ইসলাম।
অন্যদিকে জেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর দিনাজপুর পৌর কমিটির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু ব্যর্থতার গ্লানির কারণে সেই আহ্বায়ক কমিটিও ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। এখন দিনাজপুর পৌর বিএনপির কোন কমিটিই নেই। এতে দিশেহারা নেতাকর্মীরা।
জেলা বিএনপির ২২টি ইউনিটের মধ্যে ৫টি ইউনিটের এখনও কাউন্সিল হয়নি। এদিকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর এখনো সব ইউনিটের কাউন্সিল হয়নি এবং যেগুলো হয়েছে তার বেশিরভাগই পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। এতে তৃণমূলে ভেঙ্গে পড়েছে মনোবল। আবার নেতৃবৃন্দের মাঝে দেখা দিয়েছে হতাশা।
দলের এ অবস্থার কারণে ত্যাগী ও যোগ্য নেতারা নিষ্ক্রিয় হয়ে দূরে সরে যাচ্ছেন। পুলিশের হামলা, মামলা আর বাধার কারণে দলীয় কার্যক্রম করতে না পারায় নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয় থেকে দূরে থাকছে। মামলার ভয়ে এখনও অনেক নেতাকে প্রকাশ্যে বিএনপির কোন দলীয় অনুষ্ঠানে দেখা যায় না।
অনেকে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটিকে ব্যর্থ উল্লেখ করে নেতাকর্মীদের হতাশা কাটাতে শিগগির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন। তাদের মতে, পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি না থাকায় বেশিরভাগ নেতাকর্মী দলীয় কার্যালয়মুখী হচ্ছে না। আবার আহবায়ক কমিটির বৈঠকে সবাই উপস্থিত থাকেনা বলেও অনেক নেতা-কর্মীর অভিযোগ। ফলে দলীয় কার্যক্রম অনেকটা ঝিমিয়ে রয়েছে।
কয়েক মামলার আসামি ও সাবেক সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোকাররম হোসেন জানান, বর্তমান জটিল রাজনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলা করে দলকে সুসংগঠিত করতে সাহসী, নিষ্ঠাবান ও গ্রহণযোগ্য নেতা নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। দলকে গতিশীল করতে একটি জেলা কমিটি দরকার। আর এটা করতে কাউন্সিলের বিকল্প নেই।
সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক রেজিনা ইসলাম জানান, পুলিশের হামলা, মামলা আর বাধার কারণে বিএনপি ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না। দলের কার্যালয়ে কিংবা বাইরে দলীয় কোন কার্যক্রম করলেই পুলিশি বাধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তারপরেও দলের কেন্দ্রীয় কার্যক্রমগুলো পালন করে যাচ্ছে জেলা বিএনপি।
তিনি আরও জানান, গ্রুপিং-কোন্দল নেই। তবে নেতৃত্বেও প্রতিযোগিতা রয়েছে। আর বড়দ লে মতবিরোধ থাকতে পারে। কিন্তু দলের যেকোন সাংগঠনিক কার্যক্রমে আমরা সবাই এক।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল