২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ১৭:৫২

পাহাড়ে মিশ্র ফসলের চমক

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

পাহাড়ে মিশ্র ফসলের চমক

রাঙামাটির পাহাড়ে মিশ্র ফসলের চাষ করে চমক সৃষ্টি করেছেন এক কৃষাণী। সোমা বেগম (৩৫) নামে ওই কৃষাণী নিজ উদ্যোগে রাঙামাটি শহরের আসামবস্তী এলাকার ব্রাহ্মটিলার পাহাড়ে গড়ে তুলেন মিশ্র সবজির বাগান। চলতি মৌসুমে তার বাগানে ফলনও হয়েছে বাম্পার। পাহাড় জুড়ে শোভা পাচ্ছে চিচিঙ্গা, বেগুন ঢেঁড়স, মরিচ, কাঁকরোল, লালশাক, সরিষা শাক, টমেটো, কপি শাক, মিষ্টি কুমড়া ও কুমড়োসহ নানা জাতের সবজি। আবার তার সবজি স্থান দখল করেছে রাঙামাটি বিভিন্ন বাজারেরও। দামও কম, চাহিদাও বেশি। শুধু এ মৌসুমে এরই মধ্যে তিনি সবজি বিক্রি করেছেন লক্ষাধিক টাকার।

কৃষাণী সোমা বেগম জানান, স্বামী জসিম উদ্দীনকে সঙ্গে নিয়ে তিনি চলতি মৌসুমে রাঙামাটি শহরের আসামবস্তী এলাকার ব্রাহ্মটিলার পাহাড়ে নানা জাতের মিশ্র ফসল চাষ শুরু করেন। পাহাড়ি মাটিতে কোনো রকম সেজ ব্যবস্থা ছাড়া স্বামী, শাশুড়িকে সাথে নিয়ে শুরু করেন চাষাবাদ। কাপ্তাই হ্রদ ঘেষে এক পাহাড়ে খন্দ খন্দ ভারে বোপন করেন চিচিঙ্গা, বেগুন ঢেঁড়স, মরিচ, কাঁকরোল, লালশাক, সরিষা শাক, টমেটো, কপি শাক, মিষ্টি কুমড়া ও কুমড়ো। সময়মতো পানি সারসহ ও সঠিক পরিচর্যার কারণে ফলন হয়েছে বাম্পার। আশপাশের এলাকাবাসীসহ দূর-দূরান্ত থেকে অনেকেই আসেন তার বাগানের সবজি সংগ্রহ করতে। 

তিনি আরও বলেন, শুধু মৌসুমি সবজি না। তার পাহাড়ে আছে-আম. কাঁঠাল, বড়ই, নারিকেল, পেয়ারা, সুপারিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। সেসব গাছের ফলনও স্থানীয় বাজারে চাহিদা মিটিয়ে বাজারজাত হয় বিভিন্ন বাজারে। তবে স্থানীয় কৃষি বিভাগের সহযোগিতা পেলে আরও বড় পরিসরে এ মিশ্র ফসলে বাগান গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে তার।

রাঙামাটি কৃষি বিভাগ বলছে, রাঙামাটির অনেক পাহাড় বাসিন্দা আছে যারা নিজ উদ্যোগে এমন চাষাবাদ করে থাকেন। পাহাড়ি মাটি চাষাবাদের জন্য বেশ উপযোগী তাই চাষাবাদ করলে ফলনও হয় বাম্পার। চলতি মৌসুমে সবচেয়ে বেশি সবজি আবাদ হয়েছে রাঙামাটি সদর, বরকল, বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, নানিয়ারচর, লংগদু ও বিলাইছড়ি উপজেলায়। এসব উপজেলার উৎপাদিত সবজি এখন রাঙামাটির বিভিন্ন বাজারে সয়লাব হয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক পবন কুমার চাকমা বলেন, যারা কৃষাণ-কৃষাণী তাদের চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে কৃষি কর্মকর্তারা। একই সাথে সারের সঠিক ব্যবহারসহ গাছ পরিচর্যার বিষয়েও বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যাতে তারা পরিশ্রমের সফলতা পায়। এমনি পাহাড়ের অবহাওয়া উপযুগী মাটিও বেশ উর্বর। তাই এখানে যেকোনো ফসলের ভালো ফলন হয়। যাদের বাগানে পোকজনিত সমস্যার কারণে ফসল নষ্ট হয়ে যায় তাকে তাদেরও কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হচ্ছে।

বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর