উজান থেকে নেমে আসা তিস্তায় ঢল এবং অতি বর্ষণে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন জেলায় বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বন্যায় কারণে এই বিভাগের ৫ জেলায় প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল পানির নিচে রয়েছে। যেসব ফসল নিমজ্জিত হয়েছে সেগুলো হচ্ছে আমন বীজতলা, আউস, শাকসবজি, চীনাবাদাম ও তিল।
ক্ষেতের ফসল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এসব এলাকার কৃষকরা চোখে মুখে অন্ধকার দেখছে। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা বন্যা দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করে বন্যার পানি চলে যাওয়ার পর কৃষকদের আগাম অন্য ফসল রোপনের পরামর্শ দিয়েছে। এদিকে বন্যাদুর্গত এলকার জনগণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে রংপুর বিভাগে ৭০৯টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এসব টিম বন্যায় দুর্গত প্রতিটি এলাকায় অবস্থান করে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ নানা ধরনের ওষুধ সামগ্রী বিনা মুল্যে সরবরাহ করছে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় রংপুর বিভাগের ৫ জেলায় রোপা ৪ হাজার ৫৩১ হেক্টর আমনের বীজতলাসহ অন্যান্য ফসল নিমজ্জিত হয়েছে। বন্যার পানি দীর্ঘস্থায়ী ও জলাবদ্ধতা হলে এসব ফসল কৃষকরা ঘরে তুলতে পারবে না।
রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার গজঘন্টা ইউনেয়নের আমন চাষি মিজানুর, আব্দুল হাদিসহ বেশকজন জানান, বন্যায় তাদের আমনের বীজতলা একেবারে নষ্ট হয়ে গেছে। এবার তারা আমনের আবাদ করতে পারবে না। একই অবস্থা কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধাসহ অন্যান্য জেলার প্রায় আমন চাষির।
এদিকে রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. আমিন আহমেদ খান জানান, রংপুর বিভাগের বেশ কয়েকটি জেলায় বন্যা দেখায় বন্যা কবলিত মানুষদের বিশুদ্ধ পানির সংকট এবং বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ যাতে ডায়রিয়া বা অন্যকোন স্বাস্থ্য সমস্যায় অসুস্থ না হয়ে পড়ে সেজন্য স্বাস্থ্য বিভাগ স্বাস্থ্য টিম গঠন করে দ্রুত বন্যা দুর্গত এলাকায় পাঠিয়েছে। তিনি জানান, এ টিম বন্যাদুর্গত এলাকায় অবস্থান করে স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্বাস্থ্য সেবা টিম সেখানেই অবস্থান করবে। স্বাস্থ্য পরিচালক বলেন, এখন পর্যন্ত বন্যা দুর্গত এলাকায় মানুষের ডায়রিয়া বা অন্য কোন রোগের প্রাদুর্ভাবের কথা শোনা যায়নি।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলী জানান, যেসব জমি নিমজ্জিত হয়েছে তার একটি তালিকা করে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন করা হচ্ছে। আশা করি কৃষকরা ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল