২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১৮:১২

যেভাবে দেশজুড়ে পরিচিত কুমিল্লার জেঠা ও জামাইয়ের দোকান

মহিউদ্দিন মোল্লা, কুমিল্লা

যেভাবে দেশজুড়ে পরিচিত কুমিল্লার জেঠা ও জামাইয়ের দোকান

কুমিল্লার জামাইয়ের দোকান

বাংলাদেশে ৬৪ হাজারের মতো গ্রাম। তবে গ্রাম ও বাজার মিলিয়ে দেশে চায়ের দোকান কয়েক লাখ হবে। তার মধ্যে কুমিল্লার জামাই (জামাতা) ও জেঠার (বাবার বড় ভাই) দোকান দেশজুড়ে পরিচিত। 

দোকান দুইটি কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে অবস্থিত। দুই দোকানের ব্যবধান এক কিলোমিটার। জেঠার দোকান কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার পূজকরা গ্রামে মহাসড়কের পূর্ব পাশে অবস্থিত। জামাইয়ের দোকান কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার হাতিমারা গ্রামে মহাসড়কের পশ্চিম পাশে অবস্থিত। দুধ চা কিংবা সুস্বাদু সমুচা সিঙ্গারার জন্য এই দোকান পরিচিত নয়। শুধুমাত্র বাস স্টপেজের জন্য এই অঞ্চলে দোকান দুইটি পরিচিত। এই রুটের যাত্রী ও পরিবহন স্টাফরা দুইটি দোকান এক নামে চিনে। এখানে আসলে বাসের হেলপার হাঁক ছাড়েন, এই জেঠার দোকান, জামাইয়ের দোকান নামেন নামেন..।

মজার বিষয় হচ্ছে, জেঠার দোকান দশ বছর ধরে নেই। তারপরও হেলপার ডাক ছাড়ে জেঠার দোকান বলে। 

স্থানীয় পূজকরা ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপারেন্ডেন্ট মাওলানা আলমগীর হোসাইন বলেন, ৮০ দশকের প্রথম দিকে পূজকরা গ্রামের সৈয়দুজ্জামান এই দোকান গড়ে তোলেন। চুল দাড়ি সাদা দেখে অনেকে তাকে জেঠা বলে ডাকতেন। তখনকার টেম্পু চালক ও হেলপাররা তার দোকানের সামনে যাত্রী নামাতেন। তারা জেঠার নামে স্থানের নামকরণ করেন। সড়ক বর্ধিত করার জন্য দোকানটি ভেঙে ফেলতে হয়। সৈয়দুজ্জামান দুই বছর আগে মারা যান।

এদিকে জেঠার দোকানের দক্ষিণে জামাইয়ের দোকান। এই দোকানের বয়সও প্রায় ৩৮ বছর। এখানে প্রথম দোকান গড়ে তোলেন স্থানীয় ফেনুয়া গ্রামের তোফাজ্জল হোসেন। শ্বশুর বাড়ি হাতিমারার নিকট দোকান গড়ে তোলায় দোকানের নাম হয়ে যায় জামাইয়ের দোকান। তারপরে এই দোকানে যারা দোকানদারি করেছেন প্রায় সবাই জামাই। অন্যরা হচ্ছেন আবুল কালাম, বাড়ি পূজকরা, বিয়ে করেন হাতিমারায়। আরেকজন হাতিমারার সাদেক হোসেন, তিনি নিজের গ্রামে বিয়ে করেন। সর্বশেষ দোকান পরিচালনা করছেন হাতিমারার আবদুল মতিন, বিয়ে করেছেন নিজের গ্রামে। 

বর্তমান দোকানের পরিচালক আবদুল মতিনের ছেলে তরুণ তোফাজ্জল হোসেন বলেন, তার বাবা দোকান পরিচালনা করেন। মাঝে মাঝে তিনি বসেন। দেশজুড়ে এই দোকানের পরিচিতি রয়েছে। অনেকে এই নামের দোকান গড়ে উঠার গল্প শুনতে দোকানে আসেন। মূলত আগে মহাসড়কের পাশে বাড়ি ছিল না। দুই দোকানের পাশে গ্রামের সংযোগ সড়ক রয়েছে। এখানে মানুষ গাড়ি থেকে নামায় দোকানের পরিচিতি বাড়ে।

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর