সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে শুষ্ক মৌসুমেও যমুনার ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ চরসলিমাবাদ গ্রামের পয়লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। বিদ্যালয়টি বিলীন হলে চার গ্রামের কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন অঙ্কুরেই শেষ হয়ে যাবে। এ অবস্থায় দ্রুত বিদ্যালয়টিসহ গ্রামগুলো রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম হোসেন জানান, নদীভাঙ্গন কবলিত চার গ্রামের দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েরা স্কুলটিতে লেখাপড়া করে। আশপাশে আর কোনো স্কুল না থাকায় শিক্ষার জন্য এ স্কুলটিই তাদের একমাত্র ভরসা। দীর্ঘদিন ধরে এ অঞ্চল নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে ক্রমেই স্কুলটির কাছে চলে এসেছে নদী। যে কোনো সময় স্কুলটি নদীগর্ভে চলে যেতে পারে। বিদ্যালয়টি নদী গর্ভে চলে গেলে চারটি গ্রামের কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন অঙ্কুরেই নষ্ট হয়ে যাবে।
অভিভাবক বাবুল আক্তার, জাহাঙ্গীর ফকির ও মজিবর রহমান জানান, স্কুলসহ বসতবাড়ী জমিজমা বিলীন হয়ে গেলে একদিকে যেমন আমরা নিঃস্ব হয়ে পড়বো অন্যদিকে শিশুদেরও লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে।
স্থানীয় হোমিও চিকিৎসক আসাদুল ইসলাম ছালিন জানান, সরকার ভাঙ্গন রক্ষায় বোল্ডার ফেলে কিন্তু কাজেই আসে না। মাঝে-মধ্যেই বোল্ডারসহ সবকিছু বিলীন হয়ে যায়। তার মতে নদীর কাছারগুলো ধ্বসিয়ে দিয়ে পানির লেভেল করে সেখান দিয়ে অবাধে গরু-মহিষ চলাচল করে তবে মাটি মজবুত হলে ভাঙ্গনের হাত থেকে অনেকটাই রক্ষা পাওয়া সম্ভব।
বাঘুটিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল কাহ্হার সিদ্দিকী জানান, বিদ্যালয়সহ তার ইউনিয়নের বেশিরভাগ গ্রামই যমুনার ভাঙ্গনে কবলে পড়েছে। অথচ ভাঙ্গন রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না।
চৌহালী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর ফিরোজ বলেন, বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হলেও তারা ব্যবস্থা না নেয়ায় স্কুলটি সরিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ সময় পর্যন্ত একটি মালিকানাধীন জায়গায় স্কুলের কার্যক্রম চালানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সিরাজুল ইসলাম জানান, ভাঙন রোধে অচিরেই ওই এলাকায় জিওটেক্স বালুর বস্তা ফেলার কাজ শুরু করা হবে। এছাড়া ওই এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য সাড়ে ৬০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প জমা দেওয়া আছে। অনুমোদন হলেই ওই এলাকায় স্থায়ী বাধ নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার