গাজীপুরে শ্রীপুরের সারাহ রিসোর্টে বেড়াতে এসে বিষাক্ত মদ পানে একটি শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞাপনী সেবা দানকারী ব্যবসায়িক গ্রুপের তিনকর্মী মারা যাওয়ার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় মদ সরবরাহকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার ভোররাতে রাজধানীর নিকুঞ্জ এলাকা হতে তাকে গ্রেফতার করে গাজীপুর জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে গাজীপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম।
গ্রেফতারকৃতের নাম মো. জাহিদ মৃধা (৪২)। তিনি বরিশালের আগৈলঝাড়া থানার আমবৌলা এলাকার মৃত তৈয়ব আলী মৃধার ছেলে। তিনি ঢাকার মানিকদি এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন।
গাজীপুরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার এ কে এম জহিরুল ইসলাম জানান, ২৮ জানুয়ারি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার রাজাবাড়ী ইউনিয়নের চিনাসুখানীয়া এলাকার সারাহ রিসোর্টে অবকাশ যাপন করতে আসেন শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞাপনী সেবা দানকারী এশিয়াটিক মার্কেটিং কোম্পানি ‘ফোর থট ডট পিআর’ সংস্থার ৪৩ জন কর্মী। তারা ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনদিন সেখানে অবস্থান করেন। দুপুরে রিসোর্ট ত্যাগ করে ঢাকায় ফেরার পর অন্তত ১৬ জন কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদেরকে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই রাতেই বাংলাদেশ স্পেলাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কায়সার হামিদ নামে একজন মারা যান।
পরদিন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিহাব জহির নামে আরও একজনের মৃত্যু হয়। এরপর ১ ফেব্রæয়ারি সকালে উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এ কে এম শরীফুজ্জামান ভুইয়া নামে আরও এক কর্মীর মৃত্যু হলে বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পুলিশ শিহাব ও শরীফের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা নেয়। এ ঘটনায় এস আই মো. নয়ন ভুইয়া বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এদিকে ওই ঘটনায় সুস্থ হয়ে উঠা ব্যক্তিরা মদ পানের কথাটি পুলিশের কাছে স্বীকার করেন।
এর প্রেক্ষিতে গাজীপুর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে মদ সরবরাহকারী জাহিদ মৃধাকে ঢাকার নিকুঞ্জ এলাকা হতে শুক্রবার ভোররাতে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে দুই দফায় মদ সরবরাহের কথা স্বীকার করেছে।
এদিকে মদপানের ঘটনার ব্যাপারে সারাহ্ রিসোর্টের সেলস এক্সিকিউটিভ রনি বলেন, তাদের রিসোর্টে বাইরে থেকে কোনো খাবার অনুমোদিত নয়। ভেতরে প্রবেশকারীদের দেহ ও ব্যাগেজ মেশিনে স্ক্যান করে রিসোর্টে প্রবেশ করানো হয়। খাদ্য বা মদ কিভাবে ভেতরে ঢোকানো হয়েছে এবং মদ পান করা হয়েছে এ ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে পারেননি। প্রেস ব্রিফিংকালে গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) আমীনুল ইসলাম ও ডিবির ওসি নিতাই চন্দ্র সরকার উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন