নাম শুনলেই যেন বাঙালির কথা ভেসে ওঠে। চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্য পিঠা নিয়েই বগুড়ায় দিনব্যাপী শীতের পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত হলো। বাহারি নাম আর বাহারি পিঠা। এই উৎসবে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ও সামাজিক সংগঠনগুলো পিঠার পাশাপাশি নকশিকাঁথা হস্তশিল্পের পসরাও বসেছিল।
করোনাভাইরাসের কারণে সংক্ষিপ্ত আয়োজনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুক্রবার সকালে সাড়ে ১০টায় বগুড়া শহীদ টিটু মিলনায়তন চত্বরে রোমেনা আফাজ মুক্তমঞ্চে বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটার, বগুড়া থিয়েটার, কলেজ থিয়েটারের সহযোগিতায় ও ভোরহলো এবং লিটল থিয়েটারের আয়োজনে শীতের পিঠা উৎসবে বিভিন্ন এলাকার সাধারণ মানুষ ভিড় করে। স্টলে সাজিয়ে রাখা হয়েছে নানা রকমের পিঠা। কোথাও বিক্রি করা হচ্ছে আবার পরিচিত করা হচ্ছে। কোন কোন স্টলে অভিভাবকরা পিঠা তৈরির নিয়ম জেনে নিচ্ছেন।
বিভিন্ন প্রকার পিঠার মধ্যে রয়েছে, হৃদয় হরণ পিঠা, চিরুণী পিঠা, কামরাঙ্গা পিঠা, লবঙ্গলতিকা পিঠা, শতরঞ্জী পিঠা, সাগু পিঠা, গোলাপ পিঠা, পাকন পিঠা, ঝিনুক পিঠা, পুলি পিঠা, ভাপা পিঠা, দুধ পিঠাসহ নানা রকমের পিঠা। পিঠার পাশাপাশি লিটল থিয়েটারের স্টলে চিকেন ললিপপ, চতুষ্কোণ পিঠা, সুইট ফিঙ্গার, গুপ্তধনসহ হরেক রকমের নামের পিঠা নিয়ে এসেছিল। পিঠা খাবার শেষে ভোক্তারা বাঙালির চিরায়ত পান ও ছিল চেখে পড়ার মত।
লিটল থিয়েটারের পিঠার পসরা নিয়ে বসা জাকিয়া, ফাহমিদা, মৌতুসিরা জানান, কয়েকদিনের টানা পরিশ্রম শেষে শুক্রবার সকালে পিঠা উৎসবে যোগ দিয়েছেন। করোনা থাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হচ্ছে। পিঠা উৎসবে নানা বয়সীরা এসেছিল।
পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন ও প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডা. মকবুল হোসেন। সভাপতিত্ব করেন সাংস্কৃতিক সংগঠন ভোরহলোর সভাপতি তাসলিমা বেগম। দিনব্যাপী পিঠা উৎসবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি তৌফিক হাসান ময়না, বগুড়া থিয়েটারের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বজলুর রশিদ রাজা, বাংলাদেশ গ্রাম থিয়েটারের আন্তর্জাতিক সম্পাদক আব্দুল হান্নান, বগুড়া ইয়ুথ ক্যয়ারের সভাপতি আতিকুর রহমান মিঠু, বগুড়া প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য শংকর, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবিএম জিয়াউল হক বাবলা, বগুড়া নাট্যদলের সভাপতি মির্জা আহসানুল হক দুলাল, উচ্চারণ একাডেমির পলাশ খন্দকার, বগুড়ার মাটিডালি উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক লাল মিয়া।
পিঠা উৎসবের সমন্বয়কারী অভিনেতা শাহাদত হোসেন জানান, বগুড়ার এবারের আয়োজন ১৯তম। করোনাভাইরাসের কারণে এবারে অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। ৬টি স্টলে পিঠা পসরা সাজানো হয়েছে। এর মধ্যে আধুনা নামের একটি হ্যান্ডিক্যাফটের স্টলও রয়েছে। এছাড়াও উৎসবে শিশুদের জন্য চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এই প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করা হবে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৪টায় একই স্থানে।
দিনব্যাপী পিঠা উৎসবে বগুড়া থিয়েটার, কলেজ থিয়েটার, লিটল থিয়েটার ও ভোরহলো সংগঠনের শিল্পিরা নাটক, নৃত্য, সঙ্গিত ও শ্রুতি নাটক পরিবেশন করেন।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন