খাগড়াছড়িতে কারাগারে ছেলে মিলন বিকাশ ত্রিপুরাকে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যার অভিযোগে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবিতে আদালতে মামলা করেছেন বাবা মন সারাই ত্রিপুরা।
বৃহস্পতিবার খাগড়াছড়ি চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জেলার জেল সুপার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও সহকারী কমিশনারকে বিবাদী করে এই মামলা করেন তিনি।
মিলন বিকাশের আইনজীবী সৃজনি ত্রিপুরা বলেন, ‘আদালত আগামী ২২ জুন মামলার আদেশের দিন ধার্য রেখেছেন।’ মন সরাই মামলায় উল্লেখ করেন, গত ২৩ মে ছেলে মিলন বিকাশ মোবাইলে জানান, কারাগারে তাকে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছে।
২৮ মে শুক্রবার ভোরে কারাগারের বাথরুম থেকে গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় মিলনকে উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে আনার আগেই মিলনের মৃত্যু হয়েছে। মিলনের মাথায় ও গলায় আঘাতের চিহ্ন ছিল বলেও মামলায় উল্লেখ করেন বাবা মন সরাই।
গত ১৬ মে খাগড়াছড়ির গুইমারা এলাকায় প্রতিবেশীর করা পর্নোগ্রাফি মামলায় গ্রেফতার হন মিলন। মামলার অভিযোগে বলা হয়, মিলন তার মোবাইলে প্রতিবেশীর ১২ বছরের এক শিশুর গোসলের ভিডিও ধারণ করেছিলেন।
কারাগারে মিলনের মৃত্যুর ঘটনায় জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে এবং কারা কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটিকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন খাগড়াছড়ির জেল সুপার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার মো. সাজ্জাদ হোসেন।
আদালতে মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। বিজ্ঞ আদালত মামলাটি যেভাবে দেখবেন, আমরা ঠিক সেভাবেই এগুব।’
জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাঈদ বলেন, ‘তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন সম্পন্ন করা সম্ভব না হওয়ায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আমরা আরও তিন কার্যদিবস সময় বৃদ্ধির আবেদন করেছি।’
কারা কর্তৃপক্ষের গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক রাঙ্গামাটির জেলা কারাগারের জেল সুপার মতিয়ার রহমান বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য আমরা আরও পাঁচ কার্যদিবসের আবেদন জানিয়েছি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তদন্ত কমিটির আরও দুই সদস্য জানান, মিলনের মৃত্যুর ঘটনায় খাগড়াছড়ি কারা কর্তৃপক্ষের যথেষ্ট ত্রুটি ছিল।
বিডি প্রতিদিন/এমআই