রাজধানী পুরান ঢাকার ধোলাইখাল টং মার্কেট এলাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের সমাজকর্ম বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছে। হেনস্তাকারী ওই ব্যক্তিকে খুঁজতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক নারী শিক্ষার্থীকে দীর্ঘ এক বছর ধরে হেনস্তাকারী এক ব্যক্তিকে আটক করে থানায় সোপর্দ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় ধোলাইখাল টং মার্কেট এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
এর আগে, ভুক্তভোগী ওই নারী শিক্ষার্থী এক ফেসবুক পোস্টে হেনস্তার ঘটনাটির বর্ণনা দিলে শিক্ষার্থীরা দলবদ্ধ হয়ে ওই এলাকায় যান। পরে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে খুঁজে না পেয়ে অন্য আরেকটি হেনস্তার ঘটনায় হেনস্তাকারীকে ধরে বংশাল থানায় নিয়ে যান তারা। অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির নাম শাহ আলম। এরপর বংশাল থানার আওতাধীন এলাকায় না পড়ায় অভিযুক্ত ওই শাহ আলম নামের ব্যক্তিকে শিক্ষার্থীরা সূত্রাপুর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন।
ওই নারী শিক্ষার্থী ফেসবুক পোস্টে লেখেন, জানি না ফিউচারে বাংলাদেশের মেয়েদের অবস্থা কেমন হবে। আজ ১২.১০ মিনিটে আমি ধোলাইখাল থেকে রায়সাহেব বাজারে আসছিলাম। রাস্তার মধ্যে একজন লোক টুপি, পাঞ্জাবি পরা। দেখে মনে হচ্ছে জুম্মার নামাজের জন্য বের হচ্ছে। আমাকে দেখে পকেট থেকে সিলিকনের... বের করে আমাকে বাজে বাজে কথা বলতে শুরু করে। আমি চিল্লাচিল্লি শুরু করাতে তিনি সটকে পড়ল।
শিক্ষার্থীরা বলেন, একজন নারী শিক্ষার্থীর সাথে এমন আচরণে খবর পেয়ে আমরা জুমার নামাজের পরপরই ধোলাইখাল এলাকায় আসি। সবাই মিলে হেনস্তাকারীকে খুঁজতে থাকি, কিন্তু কোথায় পাইনি। এরপর তাকে খুঁজতে গিয়ে শিক্ষার্থীরা গত এক বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক নারী শিক্ষার্থীকে হেনস্তাকারী ব্যক্তিকে দেখতে পান। ওই ব্যক্তিকে দেখা মাত্রই তিনি আমাদের দেখে দৌড়ে পালাতে চেষ্টা করেন।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, আমাদের মধ্যে থাকা কয়েকজন পূর্বের ঘটে যাওয়া হেনস্তার ঘটনায় তাদের মুঠোফোনে থাকা ছবির সঙ্গে ওই ব্যক্তির চেহারার মিল দেখে চিনতে পারেন। এরপরই সবাই মিলে তাকে দৌড়ে ধরে বংশাল থানায় নিয়ে যান। পরবর্তী সময়ে এলাকাটি বংশাল থানার আওতাধীন না পড়ায় সূত্রাপুর থানায় তাকে হস্তান্তর করে আসি। এরপর আইন অনুযায়ী অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
এ বিষয়ে সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, হেনস্তার শিকার শিক্ষার্থীকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের নির্দেশ দিয়েছি। পুলিশ সদস্যরা তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ঘটনাস্থলে থাকা সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেন। শুক্রবার দোকান বন্ধ থাকায় আসামির স্পষ্ট কোনো ফুটেজ সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, আগামীকাল গিয়ে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে মামলার কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। আমরা তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।
বিডি প্রতিদিন/কেএ