১২ জুন, ২০২১ ১৪:২৭

পার্বত্যাঞ্চলে মৌসুমী ফলের বাম্পার ফলন

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি

পার্বত্যাঞ্চলে মৌসুমী ফলের বাম্পার ফলন

পার্বত্যাঞ্চলে মৌসুমী ফলের বাম্পার ফলন হয়েছে। মিশ্র ফলের রসালো গন্ধ সুভাষ ছড়াচ্ছে পাহাড়ী জনপদে। এখন টসটসে কাঁচা-পাকা ফলে ভরপুর পাহাড়ে হাট বাজার। আম, কাঠাল, লিচু আর আনারসের সয়লাব পাহাড় জুড়ে। প্রতিদিন বসছে এসব মৌসুমী ফলের হাট। এতে ক্রেতাদের আকর্ষণ যেমন বেশি, তেমনি লাভবান হচ্ছেন বিক্রেতারা। দামও স্বাধ্যের মধ্যে। 

পার্বত্যাঞ্চলের গন্ডি পেরিয়ে এসব বাহারি ফল বাজারজাত হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। রপ্তানির সাথে আয়ও বাড়ছে কৃষকদের। শুধু হাট বাজারে নয়, অনলাইনও ব্যবসা জমে উঠেছে এসব মৌসুমী ফলের।

রাঙামাটি জেলা কৃষি তথ্য সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য সূত্রে জানা গেছে, উপযুক্ত আবহাওয়ার কারণে পার্বত্যাঞ্চল অর্থাৎ তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের আম, কাঁঠাল, আনারস, লিচুর প্রচুর ফলন এসেছে। তার মধ্যে রাঙামাটি জেলা সদর, নানিয়ারচর, বিলাইছড়ি, কাপ্তাই, কাউখালী, বরকল, জুরাছড়ি, লংগদু, বাঘাইছড়ি, রাজস্থলী উপজেলাসহ বিভিন্ন জায়গায় এসব মিশ্র ফলের বাগান রয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। 

কৃষি বিভাগের পরিসংখ্যনের মতে, রাঙামাটি জেলায় মিশ্র ফলের আবাদ হয়েছে ৩৫ হাজার২৯০ হেক্টর জমিতে। যার উৎপাদন লক্ষ্য মাত্র ধরা হয়েছে ৬ লাখ ১২হাজার ৫৪ মেট্রিক টন। তার মধ্যে আমের বাগান রয়েছে প্রায় ৩ হাজার ৩৭২ হেক্টর জামিতে।

এসব বাগানে এবার প্রায় ৬০হাজার মেট্টিক টন আমের উৎপাদন হয়েছে। তার মধ্যে রেগুয়াই ও আমরুপালির বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়া পাহাড়ে ফলন ভালো হওয়ায় দেশী জাতের পরিবর্তে এখন অধিক চাষাবাদ হচ্ছে চায়না-২, চায়না-৩ জাতের লিচুর। বোম্বে লিচুর ফলনও হচ্ছে উচ্চ পরিমাণে। শুধু রাঙামাটি জেলায় লিচুর বাগান রয়েছে এক হাজার ৮৮২ হেক্টর জমিতে। চলতি বছর লিচুর উৎপাদন হয়েছে ১৭হাজার ৩৯০ মেট্টিক টন। একই সাথে আনারস-৪হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্র ধরা হয়েছে ২৯.২মেট্টিক টন। আর কাঠাঁল আবাদ হয়েছে ১০হাজার ৮৬৩ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন হয়েছে প্রায় ২ লাখ মেট্টিক টন।

রাঙামাটির স্থানীয় মৌসুমী ফল ব্যবসায়ী মনছুর আলী জানান, দেশের ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতির মধ্যে মৌসুমী ফলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তবে দাম একটু কম। তবে লাভও অনেক। আনারসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ইতিমধ্যে বাজারে এসেছে- আম, কাঠাঁল, লিচু। কিন্তু পাকা চল সংরক্ষণ করা খুব কঠিন। হিমাগান না থাকার কারণে পচে নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজর ফল।  

একই কথা জানালেন আরেক মিশ্র ফল বাগানি সুশান্ত তঞ্চঙ্গ্যা। 

রাঙামাটি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষ্ণ প্রসাদ মল্লিক জানান, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাঙামাটিয় বিভিন্ন মৌসুমী ফলের ব্যাপক চাষাবাদ হচ্ছে। ফলনও হচ্ছে লক্ষ্যমাত্রার অধিক। বিশেষ করে উন্নত চাষাবাদের কারণে পাহাড়ে সব মৌসুমে যে কোন মৌসুমী ফল পাওয়া যায় এ পার্বত্যাঞ্চলে। এজন্য পাহাড়কে এখন মৌসুমী ফলের দেশ বলা হচ্ছে। কৃষকরা যদি আরও একটু সচেতন হয় তাহলে এসব ফল উৎপাদনের ধারা ধরে রাখা সম্ভব হবে। তবে এ সম্ভাবনাময় কৃষি খাতকে উন্নয়নশীল করতে পার্বত্যাঞ্চলে মৌসুমী ফল সংরক্ষণ ও কৃষকদের স্বার্থে হিমাগার স্থাপন খুবই প্রয়োজন। 

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর