আজ শোকাবহ ৪ আগস্ট। ২০১৪ সালের এই দিনে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের মাওয়া ঘাটের কাছে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ৪ শতাধিক যাত্রী নিয়ে পিনাক-৬ নামের একটি লঞ্চ ডুবে যায়। এ ঘটনায় ১২০ জন যাত্রী বিভিন্নভাবে প্রাণে বেঁচে গেলেও মারা যায় ৪৬ জন আর নিখোঁজ হয় ৬১ জন। যাদের স্বজনেরা আজো পদ্মাপাড়ে তাদের স্বজনদের খুঁজে ঘুরে ফেরে।
মুন্সীগঞ্জের মাওয়া-কাওড়াকান্দি নৌরুটে পিনাক ৬ নামের লঞ্চটি কাওড়াকান্দি থেকে মাওয়ার উদ্দেশে ছেড়ে আসে এরপর প্রায় মাওয়া ঘাটের কাছে মাঝপদ্মায় অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাইয়ের কারণে এবং প্রবল স্রোতের তোড়ে লঞ্চ ডুবে যায়। এ সময় এক পথচারী অপর একটি লঞ্চ থেকে সরাসরি সেই ভয়াবহ লঞ্চ দুর্ঘটনার ছবিটি ধারণ করেন। ১৯৯১ সালে এম এল পিনাক-৬ নামের লঞ্চটির সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তর সনদ দেয় এবং সেখানে মাত্র ৮৫ জন যাত্রী বহনের কথা থাকলেও সেদিন প্রায় তার থেকেও চারগুণ যাত্রী বেশি উঠানো হয়। লঞ্চটি যখন ডুবে যায় তখন মাওয়াঘাটের আশেপাশে থাকা শতাধিক নৌকা ট্রলার স্পিটবোট লঞ্চ গিয়ে ১২০ জনকে জীবিত উদ্ধার করতে পারলেও বাকিরা রয়ে যায় নিখোঁজ।
ঐদিনই মাওয়া ঘাটে ছুটে আসে উদ্ধারকারী জাহাজ রুস্তুম। এরপর ৮ দিন ডুবে যাওয়া পিনাক-৬ কে উদ্ধার অভিযানে ব্যর্থ হয়। এসব উদ্ধার অভিযানে আনা হয় নানান অত্যাধুনিক মেশিন ও জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছুটে আসে সার্ভে ভেসেল ১০। এটির সাথে লঞ্চের সন্ধানে কান্ডারী-২, অনুসন্ধান জাহাজ সন্ধানী নৌবাহিনীর এলসিটি -০১২ অনুসন্ধান চালায়। কান্ডারী -২ এর স্ক্যানার সোনার নদীর নিচে সন্ধান চালিয়ে ব্যর্থ হয়। অবশেষে অষ্টম দিনে অভিযান পরিত্যক্ত ঘোষণা করে স্থানীয় জেলা প্রশাসন। সেই থেকে আজ এখনও খুঁজে ফেরে পদ্মাপাড়ে নিখোঁজদের স্বজনেরা।কেউ কেউ এখানে এসে স্বজনদের জন্য দোয়া ও মোনাজাত করেন আবার কেউ মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেন।
এ ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয় এর মধ্যে লঞ্চ মালিক কালু মিয়া ইতিমধ্যে মারা গেছেন। অপর আসামিরা আদালত থেকে জামিনে মুক্ত আছেন। মামলা দুটি বিচারাধীন। নিহত ও নিখোঁজদের পরিবার এখনও মামলার রায়ের অপেক্ষায় রয়েছেন।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা