২২ সেপ্টেম্বর, ২০২১ ০৯:২৭

মোবাইল ছিনতাই করতে গিয়ে শিশুকে হত্যা!

মাদারীপুর প্রতিনিধি:

মোবাইল ছিনতাই করতে গিয়ে শিশুকে হত্যা!

মাদারীপুরে শিবচরে মোবাইল ফোন ছিনতাই করতে গিয়ে এক শিশু হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় আরো এক শিশু আহত হয়েছেন। ঘটনার পরেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

আট বছর বয়সী নিহত রতন শিবচর উপজেলার কাদিরপুর ইউনিয়নের তাহের আকনের চর কান্দী গ্রামের জসিম মোল্লার ছেলে ও আহত নয় বছর বয়সী সোহান একই গ্রামের নাসির শিককদারের ছেলে।

এসময় মেহেদী হাসান কায়েস নামে ১৯ বছর বয়সী এক কিশোরকে আটক করা হয়। সে শিবচর উপজেলার দ্বিতীয়খন্ড ইউনিয়নের কাচাই মাতবরের কান্দি গ্রামের বিদ্যুৎ মিয়ার ছেলে। 

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রেস্টুরেন্টে খাওয়ানোর কথা বলে রতন ও সোহান নামে দুই শিশুকে ফুসলিয়ে শিবচরের কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়ন পদ্মাসেতুর সংযোগ সড়কের কাছে নিয়ে আসে মেহেদী হাসান কায়েস। এর পর সোহানকে খাবার আনার কথা বলে দূরে রেখে রতনকে রাস্তার ধারে একটি গাছের নিচে নিয়ে যায়। সেখানে রতনের কোমরে থাকা প্যান্টের বেল্ট গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। কিছুক্ষণ পরে সোহানকে নিয়ে কায়েস কাঁঠালবাড়ি ঘাট সংলগ্ন বালুর মাঠে নিয়ে গলায় বৈদ্যুতিক তার পেচিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। এসময় সোহান চিৎকার করলে কায়েস পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন সোহানকে উদ্ধার করে কাঠালবাড়ি এলাকায় তার নানা বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে তার আত্মীয় স্বজনরা শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে শিবচর থানায় নিয়ে যান। পরে সোহানের দেয়া তথ্য মতে রাত সাড়ে ১০ টার দিকে শিবচর থানা পুলিশ ও এলাকাবাসীর সহযোগীতায় কায়েসকে তার নানা বাড়ি এলাকা থেকে আটক করেন।

এসময় কায়েস প্রাথমিকভাবে পুলিশের নিকট রতনকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। পরে কায়েসকে সাথে নিয়ে কাঠালবাড়ী এলাকায় দীর্ঘক্ষণ খোঁজ করার পর রাত ১২ টার দিকে নিহত রতনের মরদেহ খুঁজে পাওয়া যায়।

নিহত রতনের মা জরিনা বেগম বলেন, বিকেল ৫ টার দিকে দেখলাম রতন ও সোহান আমাদের বাড়ির পাশে খেলছে আর কায়েস সোহানের মোবাইল দিয়ে ভিডিও করছে। এসময় আমি ওখানে গেলে ওরা অন্যর্ত চলে যায়। এরপরে আমার পালিত ছাগলের জন্য ঘাস আনতে যাই। পরে ওদের কারো খোঁজ পাইনি। পরে সন্ধ্যা হয়ে গেলে আমরা রতন ও সোহানকে না পেয়ে দুই পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করি। পরে সোহানের মা সোহানের নানা বাড়ি ফোন দিলে ঘটনা শুনতে পান। আমার রতনকে কায়েস মেরে ফেলছে। এ ঘটনায় আমি ওর বিচার চাই, ফাঁসি চাই।

এ ব্যাপারে মাদারীপুরের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) মো. আনিছুর রহমান বলেন, আমরা গত রাত দশটার দিকে জানতে পারি কাদিরপুরে একটি বাচ্চা মিসিং আছে, ইতিমধ্যে সোহান আমাদের কাছে আসে এবং ঘটনা বলে। সোহানের দেয়া তথ্য মতে আমরা এলাকাবাসীর সহযোগীতায় কায়েসকে গ্রেফতার করেছি। কায়েস প্রাথমিকভাবে ঘটনা স্বীকার করে যে, সে রতনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। কায়েসের দেয়া তথ্যমতে আমরা রতন নামে ৮ বছরের একটি শিশুর লাশ উদ্ধার করেছি। তবে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে এটি একটি মোবাইল ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। তবে আমরা তদন্ত করে দেখবো এর পিছনে অন্য কোনো রহস্য আছে কি না? মামলা দায়ের প্রক্রীয়াধীন রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর