রোজিনা বেগম (৪৫)। স্বামী থেকেও নেই। বাড়ি নাটোর উপজেলা পৌর সদরে। সংসারে ছিল একটি ছেলে ও মেয়ে। ছেলে বিয়ে করে বাড়ি থেকে চলে গেছেন, মায়ের খোঁজ রাখেন না। মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন অনেক দূর। নিজের সংসার জীবন চালানোর জন্য বেছে নিয়েছেন পিঠা বিক্রির ব্যবসা। ভ্রাম্যমাণ একটি দোকান থাকলেও সেখানে ছিল না কোনো আসবাবপত্র। সেই অসহায় নারীর পাশে দাঁড়িয়েছেন আমিরুল ইসলাম সাগর।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রোজিনা বেগম গুরুদাসপুর থানা চত্বরের পাশে পলিথিন টাঙিয়ে একটি ভ্রাম্যমাণ পিঠার দোকান দিয়েছেন। সেখানে পিঠা বিক্রি হয়। আর সেই টাকাতেই চলে তার সংসার। তবে দোকান থাকলেও সেখানে ক্রেতা বা তার কোনো বসার বেঞ্চ-টুল ছিল না। ছিল না ক্রেতাদের পিঠা তুলে দেওয়ার মতো কোনো প্লেট-চামচ কিংবা গ্লাস। অসহায় হত দরিদ্র এই নারী এভাবেই সংগ্রাম করে তার জীবন পার করছিলেন।
হঠাৎ করেই তার দোকানে পিঠা খেতে আসেন আমিরুল ইসলাম সাগর। তিনি একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। পিঠা খেতে এসে তিনি ওই নারীর জীবনের গল্প শোনেন। একপর্যায়ে ওই নারীকে যখন জিজ্ঞেস করা হয় আপনার কিছু লাগবে কিনা। সেই নারী বলে বাবা একটা বসার বেঞ্চ দিলেই হবে।
এ কথা শোনার পরেই আমিরুল ইসলাম সাগর স্থানীয় বাজারে গিয়ে রোজিনা বেগমের জন্য দুইটা বেঞ্চ, প্লেট, গ্লাস, বসার টুল ও কয়েক প্রকার ঝাকা থেকে শুরু করে পিঠা বিক্রি করার যাবতীয় সামগ্রী ক্রয় করে তার দোকান সাজিয়ে দিয়েছেন।
রোজিনা বেগম জানান, তিনি অনেক কষ্ট করে তার জীবন-জীবিকা পরিচালনা করছেন। জীবনে অনেক চড়াই-উতরাই পাড়ি দিয়েছেন। তার এই সময়ে আমিরুল ইসলাম সাগর পাশে দাঁড়ানোর জন্য আবেক আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি ভাবতেই পারেননি তাকে কেউ এভাবে সহযোগিতা করবে। তিনি আমিরুল ইসলাম সাগরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আমিরুল ইসলাম সাগর জানান, তিনি প্রতি মাসে একটি করে ইচ্ছে পূরণ করেন। এবার চতুর্থ ইচ্ছে পূরণ ইভেন্ট চলছে। সমাজের অসহায় হতদরিদ্র মানুষদের খুঁজে খুঁজে তাদের ছোট ছোট ইচ্ছে পূরণ করেন। এজন্য সাধ্যমত চেষ্টা করে রোজিনা বেগমের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন/এমআই