৭ ডিসেম্বর, ২০২১ ২২:১৭

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে সরকারি বীজ বিক্রি

ফুলপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে সরকারি বীজ বিক্রি

ময়মনসিংহের ফুলপুর, তারাকান্দা ও হালুয়াঘাটের কৃষকদের মাঝে ন্যায্যমূল্যের সরকারি মানসম্পন্ন একমাত্র বীজ বিক্রয় কেন্দ্র ফুলপুরে। এটি মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে। এই ঝুকিপূর্ণ ভবনেই চলছে বীজ বিক্রয়। 

জানা যায়, ১৯৬১ সালে বিএডিসি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পরপরই এই ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এরপর প্রায় ৬০ বছর ধরে কোন সংস্কার কাজ না করায় ও অযত্ন অবহেলায় ভবনটি বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যে কোন সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা। এর উপরে ও সাইডে নানা ধরনের আগাছা জন্ম নিয়ে দেয়াল ও ছাদ ভেদ করে বিভিন্ন গাছগাছালির শিকড় ভেতরে ঢুকে দেয়াল ফেটে গেছে। মেঝে ও ছাদের আস্তরণ খসে পড়ছে। বৃষ্টি হলে উপর থেকে ছাদ চুঁয়ে চুঁয়ে পানি পড়ে ও নিচ থেকেও পানি ওঠে। তখন অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের ছাতা মাথায় দিয়ে কাজ করতে হয়। অনেক সময় মেঝেতে  ৩-৪ ইঞ্চি পর্যন্ত পানি জমে যায়। তখন মেঝেতে বাঁশ বা তক্তা দিয়ে মাচা পেতে বীজ রাখা হয়। পর্যাপ্ত কর্মচারী না থাকায় তখন বস্তা ভিঁজে বীজের মান নষ্ট হয়ে যায়। 

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, অফিসের সামনে বালু ব্যবসায়ীদের রাখা বালু। এছাড়া প্রায়ই ওখানে বিভিন্নজনের গাড়ি পার্কিং করা হয়। অফিসের ভিতরে ফুলপুর বিএডিসি’র উপ-সহকারি পরিচালক (বীজ বিপণন) মো. আশরাফ হোসাইনের মাথার উপর পলিথিন টানানো। এর উপর বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর দুটি ঝাঁপসা ও পুরান ছবি। মেঝে স্যাঁতস্যাঁতে। একটি ভাঙা আলমিরা। কাগজপত্র ভেজা ভেজা। আগের অফিসিয়াল নথিপত্র অনেক কিছুই নেই বলে জানান এই কর্মকর্তা। দেয়াল ও ছাদের আস্তরণ খসে পড়ছে। দেয়াল ফেটে ঘরের ভিতরে বিভিন্ন গাছগাছালির শিকড় জড়িয়ে রয়েছে। ছাদের উপর বিশাল জঙ্গল। 

ফুলপুর বিএডিসি’র উপ-সহকারি পরিচালক (বীজ বিপণন) মো. আশরাফ হোসাইন বলেন, আমরা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছি। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের লিখিতভাবে বার বার জানালেও ভবন সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। তাছাড়া প্রায় ৬ বছর ধরে ৪ জন কর্মচারীর স্থলে মাত্র ১ জন কর্মচারী দিয়ে অফিসটি পরিচালিত হচ্ছে। ২ জন দারোয়ান ও ১টি পিয়নের পদ খালি রয়েছে। ফলে সেবার মান ব্যাহত হচ্ছে। ভবনের দুরাবস্থা, ইঁদুরের উপদ্রব ও মেঝেতে পানি উঠার কারণে এখানে বীজ সংরক্ষণ করা যায় না। 

এমতাবস্থায় তিনি জরুরিভিত্তিতে শূন্যপদ পূরণসহ ভবনটি সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শীতেষ চন্দ্র সরকার বলেন, তারা যদি আমাদের সহযোগিতা চায় তবে আমরা বিষয়টি দেখবো। বিএডিসির জেলা উপ-পরিচালক (বীজ বিপণন) মো. আইয়ূব উল্লাহ বলেন, আমরা অনেক আগেই মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। প্রজেক্টটা বর্তমানে অর্থ মন্ত্রণালয়ে আছে। এখান থেকে একনেকে গেলেই কাজ হয়ে যাবে। 


বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর