জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে ঢাকাগামী ডে-কোচ ও নাইট কোচের টিকিটের মূল্য বাড়িয়েছেন বাস মালিকগণ। সেইসাথে প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা ও সড়ক পথে রংপুর থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের কারণে বাসে যাতায়াত না করে ট্রেনে যাতায়াতকারী যাত্রীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। কিন্তু উত্তরাঞ্চলের জেলা কুড়িগ্রামের ‘কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস’ ট্রেনে সিট সংখ্যা শুরুতে যেমনটি ছিল তেমনিই রয়েছে। ফলে প্রতিদিন যাত্রীদের ট্রেনের টিকিট নিতে সংকটে পড়তে হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম থেকে ঢাকাগামী আন্ত:নগর ‘কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস’’ ট্রেনে কোচ বৃদ্ধি ও আরো একটি ট্রেন চালুর দাবি জেলার মানুষের। শুক্রবার সকালে স্টেশনে কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসের বেশ কয়েকজন যাত্রী জানান, কয়েকদিন আগে ডিজেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এ রুটে ঢাকাগামী বাসের ভাড়া অস্বাভাবিকভাবে বাড়ানো হয়েছে। ধরলা নদীর ওপাড়ের যাত্রীসহ জেলার অনেক মানুষ এখন ট্রেনে যাতায়াত করছেন। প্রতিদিনই যাত্রীর চাপ বাড়ছে। অনেক সময় ট্রেনে দাঁড়িয়ে থেকেও বেশ কিছু যাত্রী আসা যাওয়া করছেন। এছাড়াও টিকিট না পাওয়ায় অনেক যাত্রী রংপুর থেকে পার্বতীপুর কিংবা সান্তাহার থেকে ঢাকা ভেঙে ভেঙে টিকিট ক্রয় করে যাতায়াত করছেন।
সকাল ৭.১৫ টায় কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস (বুধবার বন্ধ) ও সন্ধ্যা ৭.৪০টায় রংপুর এক্সপ্রেস শাটল (রবিবার বন্ধ) দুটি ট্রেন কুড়িগ্রাম-ঢাকা-কুড়িগ্রাম অভিমুখে চলে। স্টেশন সূত্রে জানা যায়, কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস ট্রেনে শোভন চেয়ারে মাত্র ৫০টি সিট ও অন্যান্য এসি চেয়ারসহ সর্বমোট ৬৭টি সিট এবং রংপুর এক্সপ্রেসে মাত্র ১৫টি শোভন চেয়ার সিটে প্রতিদিন যাত্রী পরিবহণ করা হয়। অন্যদিকে অনলাইনেও রয়েছে ৫০টি সিট। তাও আগে ভাগে অনেকেই কেটে নেন। এতে দেখা যায়, প্রতিদিন অন্তত: এক থেকে দুই’শ যাত্রী টিকিট নিতে পারেন না। ফলে তাদের অনেকেই ফেরত যান।
প্রত্যেকটি ট্রেনের ক্ষেত্রে অনলাইন ও স্টেশনে এসে টিকিট কেনার সুযোগ রয়েছে। শুলকুর বাজার থেকে আসা এক যাত্রী মাহবুবুর রহমান জানান, আমি গত ৪দিন আগে সকাল আটটায় এসে কাউন্টারে ঢাকা যাওয়ার টিকিট পাচ্ছিলাম না। পরে একদিন দেরি করে ভেঙে ভেঙে কাউনিয়া থেকে সান্তাহার ও সান্তাহার থেকে কমলাপুরের টিকিট পাই।
কাউন্টার ম্যানেজার জানান, রংপুুর এক্সপ্রেসে মাত্র ১৫টি সিট। দ্রুত শেষ হয়ে যায় আমাদের করার কিছুই থাকে না। এজন্য তিনি কর্তৃৃপক্ষের কাছে সিট বাড়ানোর দাবি জানান।
তবে সংশ্লিষ্টরা জানান, কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেসে আরো অতিরিক্ত দুটি কোচ সংযোজন করা গেলে একদিকে যেমন রেলের রাজস্ব বাড়বে তেমনি যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। কুড়িগ্রাম স্টেশনে এসে টিকিট না পেয়ে প্রতিদিনই ফিরে যাচ্ছেন অনেক যাত্রী।
এমন পরিস্থিতির কথা স্বীকার করে স্টেশনের সহকারি ষ্টেশন মাষ্টার মোশাররফ হোসেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আগের চেয়ে ট্রেনে যাত্রী অনেক বেড়ে গেছে। আমরা টিকিট দিতে হিমশিম খাচ্ছি। সিটিং সমৃদ্ধ ট্রেনে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণের সুযোগ নেই। ভ্রমণের ৫দিন আগে অনলাইন ও ষ্টেশন কাউন্টারে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। কিন্ত প্রথম দিনেই সকালের মধ্যেই তা শেষ হয়ে যায়। বাকি দিনগুলোতে টিকিট না পেয়ে যাত্রীরা ফেরত যাচ্ছেন।তবে উর্ধ্বতন মহল চাইলে সিট সংখ্যা বাড়াতে পারেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল