বগুড়ার ধুনট সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ধুনট সদর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বর ও ধুনট বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কয়েক দফা পৃথক এই সংঘর্ষে প্রায় ২৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
জানা গেছে, ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে দুটি দলে বিভিক্ত হয়ে যায় নেতাকর্মীরা। গ্রুপিং এর কারণে অনাস্থা ও বহিষ্কারের ছড়াছড়িতে ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগ এখন দুটি পৃথক কমিটি দিয়ে পরিচালিত হয়ে আসছে। এক কমিটিতে সভাপতি হিসেবে রয়েছেন টিআইএম নূরুন্নবী তারিক ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই খোকন। অনাস্থা জ্ঞাপনের পর আওয়ামী লীগের অপর কমিটিতে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে রয়েছেন গোলাম সোবাহান ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে রয়েছেন মহসীন আলম। ওই দুটি কমিটির নেতৃবৃন্দ পৃথক পৃথকভাবে ১০টি ইউনিয়নের ওয়ার্ড সম্মেলন করে আসছেন। প্রতিটি ওয়ার্ডেই ওই দুটি গ্রুপের পৃথক দুটি কমিটি গঠিত হচ্ছে। এই ধারাবাহিকতায় বুধবার সকাল ১১টায় ধুনট সদর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ৫,৬,৭,৮,৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলনের আয়োজন করেন নূরুন্নবী তারিক ও আব্দুল হাই খোকন। এদিকে ইউনিয়ন পরিষদের পার্শ্ববর্ত্তী মাটিকোড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পাল্টা সভা আহ্বান করেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গোলাম সোবাহান ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মহসীন আলম।
এরপর সকাল ১১টার দিকে মাটিকোড়া স্কুল থেকে মিছিল নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে আয়োজিত তারিক গ্রুপের সম্মেলনস্থলে হামলা চালিয়ে চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করে এবং কয়েক নেতাকর্মীকে আহত করে চলে যায়। খবর পেয়ে ধুনটের ইউএনও সঞ্জয় কুমার মহন্ত ও ধুনট থানার ওসি কৃপা সিন্ধুর নেতৃত্বে পুলিশ রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের পর দুপুরে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নূরুন্নবী তারিকের বাসার সামনে আবারও দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষেরই প্রায় ২০/২৫জন নেতাকর্মী আহত হয়। এছাড়াও কয়েকটি মোটরসাইকেলও ভাংচুর করা হয়।
ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুন্নবী তারিক জানান, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ি আগামী ২০ তারিখের মধ্যে ধুনট উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন শেষ করতে হবে। এ কারণে ধুনট সদর ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ওয়ার্ড সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু সম্মেলনস্থল ভাঙচুর করে এবং কয়েক নেতাকর্মীকে পিটিয়ে আহত করে।
ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মহসীন আলম দাবি করে বলেন, সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপের কারণে ধুনট উপজেলা আওয়ামী লীগের সংখ্যাগরিষ্ঠ নেতাকর্মীরা সভাপতি নূরুন্নবী তারিক ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই খোকনের ওপর অনাস্থা জ্ঞাপন করেন। এরপর সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ি সিনিয়র সহ-সভাপতি গোলাম সোবাহানকে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তাকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এই ধারাবাহিকতায় আমরা সম্মেলনের মাধ্যমে প্রতিটি ওয়ার্ড কমিটি গঠন করছি। কিন্তু নূরুন্নবী তারিক ও আব্দুল হাই খোকন অবৈধভাবে ওয়ার্ড কমিটি গঠন করতে গেলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন