বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য অস্বাভাবিক বেড়েছে। মূল্যবৃদ্ধির এই প্রতিযোগিতায় সবখানে ব্যবহার হচ্ছে একটি বহুল প্রচলিত শব্দ সিন্ডিকেট। কথায় কথায় এই শব্দটির বিচরণ এখন সবখানে। অবৈধ সুযোগ নিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিতে সিন্ডিকেটের জুড়ি নেই। দেখতে দেখতে সিন্ডিকেটের ডালপালা গজিয়ে মহিরুহে পরিণত হয়েছে। যতই দিন যাচ্ছে এর ডালপালা ততই বাড়ছে। সিন্ডিকেটের এই গান আর কতকাল চলবে এ ধরনের প্রশ্ন এখন সচেতন মহলসহ সাধারণ মানুষের মাঝে। রবিবার অটো রিকশা শ্রমিকরা নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে নগরীতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে। মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বামদল, বিএনপিসহ একাধিক সংগঠন মানববন্ধন করেছে।
কয়েক মাস ধরেই রংপুরসহ বিভিন্নস্থানে চালের বাজারে অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। ৫০ টাকা থেকে ৭৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে চাল। দাম সরকার নির্ধারণ করে দিলেও তা মানছেন না অনেক ব্যবসায়ী। এখনও রংপুরের অনেকস্থানে বেশি দামে পণ্য বিক্রি হচ্ছে। যথেষ্ট চাল আছে কিন্তু চাল ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে তা মজুদ করে রেখেছে। ফলে চালের বাজারের পুরো নিয়ন্ত্রণ অসাধু ব্যবসায়ীদের হাতে। চালের বাজারে এই অস্থিরতার পেছনে আমদানিকারক, পাইকারি ব্যবসায়ী ও মিলারদের হাত রয়েছে বলেও ধারণা করা হচ্ছে। বড় বড় অটো রাইস মিল মালিক ও ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন হাটবাজার থেকে হাজার হাজার টন ধান চাল ক্রয় করে মজুদ রেখে নিজেদের ইচ্ছেমতো মূল্য নির্ধারণ করে বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে বাজারে চালের দাম কমছে না। শাক-সবজির কৃষক পর্যায়, খুচরা বাজার ও পাইকারি বাজারের বিস্তর ফারাকেও রয়েছে সিন্ডিকেট।
সম্প্রতি বাজারে আলুর দাম কিছুটা পড়ে যাওয়ায় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা হিমাগার থেকে আলু উত্তোলন করতে অনীহা দেখালে সিন্ডিকেট হাতিয়ে নেয়ার পাঁয়তারা করছে কোটি কোটি টাকা।
রংপুর পৌরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান কাজী মো. জুননুনসহ অনেকেই বলেন, দেশে সিন্ডিকেট ও মজুদদারি প্রতিরোধে আইন হয়েছে। এই আইনের সুষ্ঠু প্রয়োগ করে সিন্ডিকেট ও মজুদদারদের দৌরাত্ম্য রোধ করা হলে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তের মাঝে কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসবে। তখন বাজার হবে প্রতিযোগিতা মূলক। আইনে মজুদদার ও সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বিধান রাখা হয়েছে জেল ও জরিমানার। সরকার এটি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে পারলে দেশে নতুন এক দিগন্তের সূচনা হবে।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা