বন্ধুকে নির্যাতন ও শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগে সাতক্ষীরায় কলেজছাত্র মোবাশির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার বেলা ১২টায় জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মোবাশির হোসেন (২৩) আশাশুনি উপজেলার বৈকারঝুটি গ্রামের আব্দুল মজিদ মোড়লের ছেলে। সে আশাশুনি ডিগ্রী কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, আশাশুনি উপজেলার বৈকারঝুটি গ্রামের শঙ্কর সরকারের ছেলে চন্দ্রশেখর সরকার ও একই গ্রামের মোবাশির হোসেন ছোটবেলা থেকে একসঙ্গে লেখাপড়া করতো। একই সাথে এসএসসি পাশ করার পর চন্দ্রশেখর সাতক্ষীরা সরকারি কলেজ ও মোবাশির হোসেন আশাশুনি ডিগ্রী কলেজে ভর্তি হয়। নবম শ্রেণীতে পড়াকালীন মোবাশিরের সঙ্গে একই গ্রামের পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ুয়া ইন্দ্রানী ঘোষ ওরফে পাপিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। একজন হিন্দু মেয়ের সঙ্গে একজন মুসলিম যুবকের প্রেম মেনে নিতে পারেনি চন্দ্রশেখর। পাপিয়ার সঙ্গে দেখা করিয়ে না দিলে বিষয়টি সকলকে জানিয়ে দেবে বলে হুমকি দেয় চন্দ্রশেখর। একপর্যায়ে ২০২০ সালের ১৮ অক্টোবর রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাড়ি থেকে চন্দ্রশেখরের ঘেরের বাসায় এসে দীর্ঘক্ষণ গল্প করে মোবাশির। রাত ১২টার পর চন্দ্রশেখরকে গলা চেপে শ্বাসরোধ করে হত্যা লাশ পানির মধ্যে ফেলে দেয়।
মামলায় বিবরণে আরও জানা গেছে, ১৯ অক্টোবর ঘের থেকে চন্দ্রশেখরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ২০ অক্টোবর নিহতের বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা করেন। মামলায় বন্ধু মোবাশিরকে আটক করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। মোবাশির পাপিয়ার সঙ্গে সম্পর্ককে ঘিরে বন্ধু চন্দ্রশেখরকে শ্বাসরোধ করেছে বলে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জজ আদালতের পিপি আব্দুল লতিফ জানান, মামলার নথি ও ১৪ জন সাক্ষীর জবানবন্দি পর্যালোচনা শেষে আসামির বিরুদ্ধে হত্যার পর লাশ গুম করার চেষ্টার অভিযোগে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা অনাদায়ে আরও দুই বছর কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে আদালত। মামলায় আসামি পলাতক রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম