টাঙ্গাইলের সখীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কনসালট্যান্ট, মেডিকেল অফিসার ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাসহ ৩৩ পদ শূন্য। ডিজিটাল এক্সরে মেশিন না থাকায় প্রাইভেট ক্লিনিকই রোগীদের একমাত্র ভরসা। প্রতি মাসেই চাহিদা দেখাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন প্রায় সহস্রাধিক মানুষ চিকিৎসা নিতে আসেন সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। পঞ্চাশ শয্যা বিশিষ্ট এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপজেলার আড়াই থেকে তিন লক্ষ মানুষের চিকিৎসা সেবার মাধ্যম। এছাড়া পার্শ্ববর্তী উপজেলা ভালুকা, ঘাটাইল ও বাসাইলের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকেও চিকিৎসা নিতে আসেন বলে জানায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিন ধরে এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কার্ডিওলজি (জুনিয়র কনসালটেন্ট), চক্ষু (জুনিয়র কনসালটেন্ট), নাক কান গলা (জুনিয়র কনসালটেন্ট), মেডিকেল অফিসার, ডেন্টাল সার্জন, মেডিকেলে অফিসার (হোমিও) পদ শূন্য। এদিকে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার পদ, সহকারী পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা একজন, পরিবার পরিদর্শক একজন, পরিবার কল্যাণ সহকারী ১৭ জন, আয়া ৫ জন, নিরাপত্তা প্রহরী একজন ও অফিস সহায়ক পদে একজন শূন্য। প্রতি মাসে মাসিক মিটিংএ এসবের চাহিদা দেখাচ্ছে বলে জানায় স্থানীয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।
এদিকে হাসপাতালে ডিজিটাল এক্সরে মেশিন না থাকায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন রোগীরা। বাধ্য হয়েই প্রাইভেট হাসপাতালে যেতে হয় দূরদূরান্ত থেকে আসা অসহায় রেগীদের। বর্তমান সময়ে ডাক্তাররা রোগীদের ডিজিটাল এক্সরে করতে বলে, তাই হাসপাতালে কোনো এক্সরে হয় না বললেই চলে।
উপজেলার কালমেঘা গ্রাম থেকে আসা একাধিক রোগীর অভিভাবক জানায়, রক্তের কয়েকটি পরীক্ষা করলাম কিন্তু এক্সরে করাতে পারছি না। ওই এলাকার আবদুল করিম মিয়া জানান, ডাক্তারেরে পরামর্শ নিয়ে বাচ্চার হাত ভাঙছে নাকি ফাটছে তা দেখতে এক্সরে করতে আসছি। এখানে নাকি ডিজিটাল এক্সরে হয় না, তাই প্রাইভেট ক্লিনিকে যাচ্ছি।
উপজেলার আমতৈল এলাকার একাধিক নবদম্পতি বলেন, পরিবার পরিকল্পনা কোনো মাঠকর্মী আমাদের এলাকায় আসে না বললেই চলে। পাশের বাড়ির ভাবিদের পরমর্শ নিয়েই চলছি।
উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা সহকারী কর্মকর্তা জাকিয়া জান্নাত বলেন, আমাদের কাজই হলো মানুষকে পরিবার পরিকল্পনার মধ্যে নিয়ে আসা। মাঠ পর্যায়ে আমাদের জনবল সংকট যে কারণে সাধারণ মানুষকে পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কে পরামর্শ দিতে সাময়িক সমস্যা হচ্ছে। তবে যতগুলো জনবল আছে তারা সবাই মাঠে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন।
সখীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (ইউএসও) ডা. মো. রুহুল আমিন মুকুল বলেন, এই সময়ে ডিজিটাল এক্সরে মেশিন খুবই জরুরী। এজন্য প্রত্যেক মাসেই চাহিদা পাঠাচ্ছি হয়তো, অল্প সময়ের মধ্যেই পেয়ে যাবো। এখানে তিনটি কনসালটেন্ট ব্যতীত সবগুলো কনসালটেন্ট ও অন্যান্য মেডিকেল অফিসার আছে। আমি দুই-আড়াই মাস আগে এখানে যোগদান করেছি, আশাবাদী কয়েক মাসের মধ্যে জেলা সিভিল সার্জন স্যারের সহযোগিতায় এই উপজেলার স্বাস্থ্য সেবার মান আরও উন্নত করবো।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল