ইসরায়েলের রাজধানী তেলআবিবে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের যৌথ গোপন সামরিক ঘাঁটি ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধের সময় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সরাসরি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিল। অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গ্রেজোন’ এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে, তেলআবিবের বিলাসবহুল দ্য ভিঞ্চি টাওয়ারস ভবনের নিচে অবস্থিত ‘সাইট-৮১’ নামে ওই ভূগর্ভস্থ কমান্ড সেন্টারটি। এটি ইসরায়েলি সামরিক গোয়েন্দা বাহিনীর একটি গুরুত্বপূর্ণ কমান্ড ও কন্ট্রোল নোড হিসেবে ব্যবহৃত হতো। প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, এক দশকেরও বেশি সময় আগে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর প্রকৌশলীরা সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন এটির নির্মাণকাজে। গত ১৩ জুন তেলআবিবের উত্তরাঞ্চলে একাধিক স্থানে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র আঘাতের পর দ্রুত পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ। সাংবাদিকদের ঘটনাস্থলে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ফক্স নিউজের সাংবাদিক ট্রে ইয়িংস্টসহ কয়েকজন প্রতিবেদককে পুলিশ সরিয়ে দেয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সেই হামলার কিছুক্ষণ পর ইরানি রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানায়, তাদের হামলায় ইসরায়েলের সামরিক ও গোয়েন্দা স্থাপনায় সুনির্দিষ্টভাবে আঘাত হানা হয়েছে।
ইরান দাবি করে, এটি ছিল ইসরায়েলের সাম্প্রতিক ইরানে অভ্যন্তরীণ হামলার জবাব। দ্য গ্রেজোনের অনুসন্ধান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের আর্মি কর্পস অব ইঞ্জিনিয়ার্সের তত্ত্বাবধানে ‘সাইট-৮১’ প্রকল্পটি ২০১৩ সালে ৬ হাজার বর্গমিটারের ইলেকট্রোম্যাগনেটিক সুরক্ষিত স্থাপনায় রূপ নেয়। ভূ অবস্থান বিশ্লেষণ ও সরকারি নথিপত্রে দেখা গেছে, এটি তেলআবিবের দ্য ভিঞ্চি টাওয়ারসের নিচে, কানারিত এয়ার ফোর্স টাওয়ারসের কাছেই অবস্থিত। এলাকাটি ঘনবসতিপূর্ণ আবাসিক অঞ্চল, যেখানে মাত্র ১০০ মিটার দূরে রয়েছে শিশুদের খেলার মাঠ ও একটি কমিউনিটি সেন্টার। প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েল বেসামরিক জনপদের ভিতর এমন সামরিক স্থাপনা গড়ে তুলে সাধারণ মানুষকে ঝুঁকিতে ফেলেছে- যা আন্তর্জাতিকভাবে মানবঢাল ব্যবহারের শামিল। প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, ইচ্ছাকৃতভাবে গুগল ও ইয়ানডেক্স ম্যাপে ওই এলাকার স্যাটেলাইট ছবি ঝাপসা রাখা হয়েছে। এমনকি স্ট্রিটভিউ সুবিধাও বন্ধ, যা তেলআবিবের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনাগুলোর ওপর চলমান সেন্সরশিপের প্রমাণ বলে উল্লেখ করা হয়। -মেহের নিউজ এজেন্সি