লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধায় দেশের প্রথম ‘বাংলাদেশ পুলিশ জাদুঘর’-এর উদ্বোধন করা হয়েছে। আজ বুধবার বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি ড. বেনজির আহম্মেদ এই জাদুঘরের উদ্বোধন করেন।
এ সময় রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওয়াহাব ভূঁইয়া, রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আব্দুল আলীম মাহমুদ, লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর, লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু বক্কর, রংপুর বিভাগের পুলিশের কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, বিজিবির কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উত্তরের সীমান্তবর্তী ছোট্ট একটি জেলার নাম লালমনিরহাট। চারিদিকে ছোট বড় বেশ কয়েকটি নদী দিয়ে ঘেরা জেলাটি। জেলাটির ঠিক উত্তরে ভারতের সীমান্ত। সেখানেও রয়েছে ধরলা নামে আরও একটি নদী। এককথায় জেলাটির চারিদিকেই নদী আর নদী। সেই ছোট লালমনিরহাট জেলাতেই আর দুইদিন পর লালমনিরহাটে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে দেশের প্রথম বাংলাদেশ পুলিশ জাদুঘর।
১৯১৬ সালে নির্মিত একটি পাকা পরিত্যক্ত প্রাচীন এই ভবনের ঐতিহ্য রক্ষার্থে এই ভবনে জাদুঘরটি হচ্ছে। একশত বছরের পুরনো এই ঐতিহাসিক এ ভবনকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন লালমনিরহাট জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) আবিদা সুলতানা।
লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশ পুলিশ জাদুঘর লালমনিরহাটে মোট সাতটি গ্যালারি থাকছে। প্রতিটি গ্যালারিতে রাখা নিদর্শনগুলো দর্শক ও গবেষকদের সামনে তুলে ধরতে কাচের আবরণ ও আলোর ব্যবস্থা থাকবে। এই জাদুঘরে বিভিন্ন সময়ে পুলিশ বাহিনীর নানা স্মারক ও তথ্য সবার জন্য উপস্থাপন করা হবে। প্রাচীন এই ভবনের ঐতিহ্যও রক্ষা পাবে জাদুঘরের মাধ্যমে।
গ্যালারিগুলোতে সুলতানি আমল ও মোগল আমল, ব্রিটিশ আমল, ভারতীয় উপমহাদেশে পুলিশের উদ্ভব ও বিকাশ নিখুঁতভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। গ্যালারি দুইয়ে এ থাকছে ব্রিটিশ আমল, আধুনিক পুলিশের যাত্রা। তিন নম্বর গ্যালারিতে রয়েছে স্বাধীনতাযুদ্ধ, ভারতীয় উপমহাদেশ ও বাংলাদেশ স্বাধীনতাযুদ্ধে পুলিশ।
গ্যালারি চারে রয়েছে ডার্করুম, গ্যালারি। পাঁচে রয়েছে মুক্তাঞ্চলে মুক্তি পুলিশ। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকালে ৬ নম্বর সেক্টরের হেডকোয়ার্টার ছিল লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে। সে সময় গঠন করা হয়েছিল মুক্তাঞ্চলের মুক্তি পুলিশ। তাদের সে সময়ের কর্মকাণ্ড তুলে ধরাসহ কিছু নিদর্শন থাকছে এই গ্যালারিতে। গ্যালারি ছয়ে আছে বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী। গ্যালারি সাতে বাংলাদেশ পুলিশ গ্যালারি, আধুনিক সময়কাল।
জেলা পুলিশ সুপার আরও জানান, দুই বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম, আমার পুলিশ সদস্য ও জেলাবাসীর সহযোগিতায় ইতোমধ্যে দেশের প্রথম পুলিশ জাদুঘর তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়াও পাশের একটি ভবনে শিশু কর্নার স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে আগত দর্শনার্থী ও তাদের সন্তানরা আনন্দ ও বিনোদন গ্রহণ করবেন। এ জাদুঘর ও শিশু কর্নারটি সর্বসাধারণের প্রবেশের জন্য উন্মুক্ত রাখা হবে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর