বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলায় মাদক নিয়ে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় দুই ইউপি সদস্যসহ কমপক্ষে ১২ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে কচুয়া উপজেলার ধোপাখালি ইউনিয়নের মাধবকাঠি এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় ৩টি মোটরসাইকেল ও একটি দোকান ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। দুই গ্রুপের আহতদের মধ্যে ৮ জনকে বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহতরা হলেন- কচুয়া উপজেলার ধোপাখালি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও ৪ নং ওয়ার্ডের সদস্য জাকির হাজরা (৩৫), ৫ নং ওয়ার্ডের সদস্য ও থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহসভাপতি মামুনুর রশীদ (৩২), হেদায়েত হাজরা (৪২), এবাদুল হাওলাদার (২৮), ব্যবসায়ী সেলিম হাজরা (৪৫), রাজিব (১৭), জাহাঙ্গীর হাজরা (২৭), ও আতিয়ার রহমান (৩৭)।
আহত ইউপি সদস্য জাকির হাজরা বলেন, ধোপাখালি ইউপি চেয়ারম্যান মকবুল হোসেনের ছেলে শাহিন, শ্রমিক লীগ নেতা মাসুদ হাওলাদার ও সাইদুল মাঝির নেতৃত্বে এলাকায় একটি মাদক সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে আমি তাদের মাদক বেচা-কেনার প্রতিবাদ করে আসছি। যার কারণে বিভিন্ন সময় তারা আমাকে হুমকি দিচ্ছিল।
বৃহস্পতিবার কচুয়া উপজেলা সদর থেকে ফুটবল খেলা দেখে ফেরার পথে রাত সাড়ে আটটার দিকে মাধবকাঠি এলাকায় পৌঁছালে পূর্বে থেকে ওৎ পেতে থাকা শাহিন, মাসুদ হাওলাদার ও সাইদুল মাঝির নেতৃত্বে তাদের ক্যাডার বাহিনীর সদস্যরা আমাদের উপর হামলা করে। তারা আমাদের ৯ জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে গুরুত্বর আহত করে। এসময় ৩টি মোটরসাইকেল ও সেলিমের দোকান ভাংচুরসহ নগদ লক্ষাধিক টাকা লুটে নেয়। এ সময়ে শাহিন গ্রুপেরও ৩ জন আহত হয়।
আহত অপর ইউপি সদস্য মামুনুর রশীদ বলেন, জাকির মেম্বরকে বাঁচাতে গেলে হামলাকারীরা আমাকে মারধর করে। চেয়ারম্যান মকবুল হোসেনের ছত্রছায়ায় তার ছেলে এলাকায় ক্যাডার বাহিনী গড়ে তুলে মাদক ব্যবসাসহ যা ইচ্ছে তাই করে বেড়াচ্ছে। ধোপাখালি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ আব্দুল হাই বলেন, হামলাকারীরা শ্রমিক লীগ করেন। এ ধরণের হামলায় দলীয় শৃঙ্খলা নষ্ট হবে। এই ঘটনার তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন তিনি।
ধোপাখালি ইউপি চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন বলেন, আমার ছেলে হামলার সময় ঘটনাস্থলে ছিল না। এছাড়া আমার ছেলে কোনো মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত নয়। দলীয় বিভিন্ন কথা কাটাকাটির জেরে শ্রমিক লীগ নেতা মাসুদ, সাইদুল ও জাকির মেম্বরদের মধ্যে ঝামেলার সৃষ্টি হয়েছে। এসব বিষয়ের সাথে আমার ও আমার ছেলের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। কোনো পক্ষ এখনো থানায় অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর