বাংলাদেশ ঋতু বৈচিত্র্যের দেশ। নানা ঋতুতে এর প্রকৃতি নানান সাজে সজ্জিত হয়। এদেশের প্রতিটি ঋতুই নিজ নিজ বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল। ঠিক তেমনি বর্ষায় নীলফামারীর গ্রামীণ জনপদ যেন এক অপরূপ চিত্রে ফুটে ওঠে। সেরকমেই বর্ষায় মাছ ধরার দৃশ্য অন্যতম।
বর্ষা মৌসুম শুরু হলেই গ্রামীণ জীবনে মাছ ধরার ধূম পড়ে। নতুন পানিতে ছুটে আসে নানা প্রজাতির মাছ। এ পানিতে মাছ ধরার ব্যস্ততাও বেড়ে যায় স্থানীয়দের। তাই কদর বেড়েছে মাছ ধরার নানান উপকরণের। সে সময় বাঁশকাটিতে নিপুণ হাতের কারিগরদের বাঁশ দিয়ে তৈরি টেপাই, দারকি, জলঙ্গা, খলাই, পলাই ইত্যাদি মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণ তৈরীতে ব্যস্ত থাকেন তারা।
হাটে বিক্রি করতে আসা ডিমলা উপজেলার দক্ষিণ তিতপাড়া গ্রামের হামিদার রহমান বলেন, পরিবারের সবাই মিলে এক সপ্তাহ ধরে টেপাই, দারকি, জলঙ্গা, পলাইসহ মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণ তৈরি করে মজুদ করা হয়। এরপর স্থানীয় শনি-বুধবার সাপ্তাহিক হাটে বিক্রি করা হয়। ১টি বাঁশ দিয়ে ৩টি টেপাই তৈরি করা হয়। প্রতিটি বাঁশের দাম ২০০টাকা। আকার ভেদে একেকটি টেপাই বিক্রি হয় ৩৫০ থেকে ৪০০টাকায়। তবে পরিশ্রমের তুলনায় দাম একটু কম।
একই এলাকার কারিগর মজিবার বলেন, দেশীয় মাছের স্বাদ নিতে গ্রামের খালে- বিলে, খেতে ও উন্মুক্ত জলাশয়ে এ ফাঁদ পেতে মাছ ধরেন গ্রামের মানুষজন। তাই মাছ ধরার উপকরণ বেচা কেনার ধুম পড়েছে। তৈরি করা ভাল মানের একেকটি টেপাই ৪০০- ৪৮০টাকা, জলঙ্গা ২৫০-৩০০টাকা, দারকি ২০০-২৫০টাকা ,পলাই ১৫০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
হাটে কিনতে আসা সদরের লক্ষিচাপ ইউনিয়নের আফাজ উদ্দিন বলেন, বর্ষা মৌসুমে বাড়ির পাশে খালে-বিলে, খেতে মাছ ধরার জন্য টেপাই, দারকি ক্রয় করেছি। এগুলো দিয়েই মাছ ধরি। এ সময় বাজার থেকে মাছ কিনতে হয় না।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন