নানান অভিযোগে পুলিশের চাকরি আগেই চলে যায়। এরপর এলাকায় তারা বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়েন বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। সেই দুই ভাই এবার বগুড়া শহরের জহুরুলনগরে স্থানীয় একটি ছাত্রাবাসে ছাত্রদের আউটসোর্সিংয়ের অফিসে চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যার ঘটনায় ভবনের মালিক সদর থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ তাদের রাতেই গ্রেফতার করে।
গ্রেফতার আপন দুই জমজ ভাই হলেন- জহুরুলনগর ব্যাংকপাড়ার আব্দুল কাদের ছেলে আবু হাসান আলাল (৩০) এবং আবু হোসেন দুলাল (৩০)। উভয়েই বাংলাদেশ পুলিশের কন্সটেবল পদে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু নানা অপরাধের অভিযোগে তাদের চাকরি চলে যায়।
চাঁদাবাজির শিকার হওয়া ভবনের মালিক মো. আল আমিনের করা এজাহার এবং সদর থানা সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৭ টায় দুই সহোদর আলাল ও দুলাল সঙ্গীয় পটল (২৮), রানা (৩২) এভং জনিসহ (৩২) কিছু অজ্ঞাত যুবকদের নিয়ে আল আমিনের ভবনের নিচ তলায় শিক্ষার্থীদের মেস ও আউটসোর্সিংয়ের অফিসে এসে অযথা অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। একটি উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশের সৃষ্টি করেন তারা। তাদের তাৎক্ষণিক ২ লাখ টাকা চাঁদা না দিলে অফিস বন্ধ করে দেবেন বলে হুমকি দেন। এ ছাড়া চাঁদা না দিলে আউটসোর্সিংয়ের কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটার ও ল্যাপটপ ভেঙে ফেলবেন মর্মেও হুমকি দেন।
এদিকে একই রকম পরিবেশ সৃষ্টি করে গত ৭ এপ্রিল মামলার বাদীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে আসামিরা ৫০ হাজার টাকা জোরপূর্বক চাঁদা নিয়ে যান মর্মে এজাহারে উল্লেখ করেন বাদী আল আমিন।
গ্রেফতারি অভিযানের নেতৃত্বে থাকা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার এসআই রহিম রানা জানান, শুক্রবার সন্ধ্যার পর ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে সদর থানার অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে যাওয়া হয়। প্রাথমিক তদন্তে চাঁদাবাজির ও হট্টগোলের ঘটনা সত্যতা পাওয়া যায়। দুই সহোদর আলাল ও দুলালকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার দুই ভাইয়ের নামে হত্যা মামলাসহ দুলালের নামে বিভিন্ন অপরাধে আগে আরও ৩টি মামলা রয়েছে।
তিনি জানান, পুলিশের চাকরি চলে যাওয়ার পর এলাকায় তারা নানা অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে গেছেন বলে এলাকার বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সেলিম রেজা জানান, গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে শুক্রবার রাতেই মামলা দায়ের হয়। শনিবার দুপুরের পর তাদের আদালতে পাঠানো হয়। এ ছাড়া এজাহারভুক্ত বাকি আসামিদেরও গ্রেফতারে অভিযান চলমান।
তিনি বলেন, জেলা পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে বগুড়ায় কোনো চাঁদাবাজের ঠাঁই হবে না, সে যত ক্ষমতাশালীই হোক না কেন। চাঁদাবাজদের শিকড় সমূলে উপড়ে ফেলা হবে।
এজন্য শুধু সকলকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানান ওসি।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ