৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১৬:০১

আওয়ামী লীগ নেতা হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

আওয়ামী লীগ নেতা হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৩

বগুড়ার শেরপুরে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মর্তুজা কাওসার অভি (৩৮) খুনের ঘটনায় ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের আট নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার নিহত ওই আওয়ামী লীগ নেতার স্ত্রী খাদিজা আক্তার লিমা বাদি হয়ে এই মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি শহরের নয়াপাড়া এলাকার জিল্লুর রহমানের ছেলে আরিফুর রহমান শুভ (৩৫), মির্জাপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক শহরের নয়াপাড়া (কোর্টপাড়া) এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৩২), শেরপুর পৌর শাখা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক (রুহান-কারিমুল কমিটি) মো. রকি (২৭), শেরপুর পৌর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক উপজেলার শেরুয়া গ্রামের পাকছার আলীর ছেলে রিয়াজুল ইসলাম বাপ্পি (৩৭), ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক শহরের উলিপুর পাড়া আলতাব হোসেনের ছেলে এনামুল মুসলিমিন সোহাগ (৩৫), পৌর কমিটির সদস্য শহরের খন্দকারপাড়ার সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম রাঞ্জুর ছেলে আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ হিমেল (৩২), যুবলীগ কর্মী শহরের পূর্বদত্তপাড়া এলাকার গোলাম মোস্তফা ড্রাইভারের ছেলে সোহাগ হোসেন (৩০) ও শহরের নয়াপাড়া এলাকার জাহিদ হোসেন (২৬)। এ ছাড়া আরও ৮-৯জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। এরমধ্যে হিমেল, সোহাগ ও জাহিদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মামলা সূত্রে জানা যায়, আ.লীগ নেতা অভির সঙ্গে ঠিকাদারি ও হাটের ইজারা ব্যবসা নিয়ে মামলার অভিযুক্তদের সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। একপর্যায়ে বিগত ২৮ সেপ্টেম্বর বুধবার সাড়ে চারটার দিকে অভি প্রাইভেটকার মেরামতের জন্য উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন মোজাহিদ মোটর গ্যারেজে যান। এরপর পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ হিমেল অভিকে ডেকে গ্যারেজের দক্ষিণ পাশের ফাঁকা বাগানের মধ্যে নিয়ে কথা বলছিল। এ সময় শরীফ নামের যুবক সাধারণ লোকজনকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়।

এই সুযোগে আগে থেকেই ওঁৎপেতে থাকা মামলার অন্য অভিযুক্তরা এসে অভির সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। পরে তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। প্রাণ বাঁচাতে বাগানের ভিতর দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হন অভি। পরে রাম-দা, চাপাতি ও চাইনিজ কুড়াল দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এরপর আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (শজিমেক) নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক অভিকে মৃত ঘোষণা করেন বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

নিহত শেখ মর্তুজা কাওসার অভি শেরপুর পৌর শহরের বারোদুয়ারী খন্দকার পাড়া এলাকার মৃত হোসাইন কাওসার ফুয়াদের ছেলে। তিনি পৌর আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

মামলার বাদি খাদিজা আক্তার লিমা অভিযোগ করে জানান, আমার স্বামীর হত্যাকারীরা খুবই প্রভাবশালী। ঘটনার পর থেকেই তাদের নামে মামলা না করার জন্য নানাভাবে আমাকে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছিল। কিন্তু আমি সেসব বাধা উপেক্ষা করে আইনের আশ্রয় নিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন পালনের কথা বলে আমার স্বামীকে ডেকে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, আমার স্বামীর খুনিরা যতবড়ই প্রভাবশালী হউক না কেন আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য প্রশাসনের নিকট জোর দাবি জানাই। 

শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান খোন্দকার জানান, এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় থানায় মামলা নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে মামলার এজাহার নামীয় অভিযুক্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পাশাপাশি মামলার অন্য অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

বিডি প্রতিদিন/আবু জাফর

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর