নরসিংদীতে আলোচিত ব্যাংকার ও ডাক্তারকে প্রাইভেটকারে উঠিয়ে সর্বস্ব ছিনতাইসহ এটিএম কার্ডের মাধ্যমে বুথ থেকে টাকা উত্তোলনের ঘটনায় জড়িত ৪ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
সোমবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে নরসিংদী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এই তথ্য জানানা নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আল আমিন।
এর আগে, রবিবার (১৬ অক্টোবর) রাতে গাজীপুর জেলার গাছা থানার গাছা পূর্বপাড়া এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। ওই সময় তাদের কাছ থেকে একটি প্রাইভেটকার, লুণ্ঠিত ৭০ হাজার টাকা, ২টি ছুড়ি, ১টি কচস্টেপ রোল ও ১টি গামছা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- বরগুনার আমতলী থানার বলই বুনিয়া গ্রামের মাজেদ মৃধার ছেলে মো. নজরুল মৃধা (৩৩), দিনাজপুরের চিরিবন্দর থানার দক্ষিণ নগর গ্রামের সৈয়দ আলীর ছেলে মো. রাজ্জাক (২৪), ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া থানার রাধাকানাই এলাকার আব্দুল বারেকের ছেলে মো. তারেক মিয়া (২১) ও দিনাজপুরের চিরিরবন্দর থানার রানীপুর এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে রফিকুল ইসলাম (২২)। তাদের মধ্যে তিনজন গাজীপুর ও একজন সাভারে ভাড়া বাসায় থাকতেন।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আল আমিন জানান, গত ১০ সেপ্টেম্বর পূবালী ব্যাংকের কর্মকর্তা আল মামুন ভৈরব উপজেলার দুর্জয় মোড় হতে রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশ্যে একটি প্রাইভেটকারে উঠে। এসময় ওই প্রাইভেটকারে যাত্রীবেশে ড্রাইভারসহ মোট চারজন ছিনতাইকারী ছিল। কিছুদূর আসার পর একজন যাত্রীবেশে ছিনতাইকারী ব্যাংক কর্মকর্তা আল মামুনকে জিম্মি করে হাত পা, চোখ বেঁধে ফেলে। পরে তার সাথে থাকা মানিব্যাগ, মোবাইল ফোন ও পূবালী ব্যাংকের এটিএম কার্ড এবং জোরপূর্বক কার্ডের পিন নাম্বার নিয়ে নেয়। পরে এটিএম থেকে দুই দফায় সর্বমোট ১ লাখ ৯১ হাজার উত্তোলন করে লুট করে নেয়। পরে ১২টার দিকে ঢাকা সিলেট মহাসড়কের শেখেরচর বাজার এলাকার আল মামুনের হাত পা চোখ মুখ বাঁধা অবস্থায় গাড়ি থেকে ফেলে দেয়। পরবর্তীতে ওই ঘটনায় নরসিংদী মডেল থানার আল মামুন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
অপরদিকে, গত ৭ সেপ্টেম্বর রাত ৭টা ৪৫ মিনিটে জেলা ভেটেনারী হাসপাতালে কর্মরত ডা. হেলাল আহমদ তার পারিবারিক প্রয়োজনে ব্রাহ্মনবাড়ীয়া যাওয়ার পথে ইটাখোলা থেকে একটি প্রাইভেটকারে উঠেন। এসময় ওই প্রাইভেটকারে থাকা ড্রাইভারসহ চারজন যাত্রীবেশী ছিনতাইকারী ছিল। কিছুক্ষণের মধ্যে যাত্রীবেশে ছিনতাইকারী তাকে জিম্মি করে নগদ টাকা, একটি আইফোন মোবাইল এবং ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এটিএম কার্ড ছিনিয়ে নেয়। পরে এটিএম বুথ থেকে এক লাখ উত্তোলন করে নিয়ে যায়। টাকা উত্তলোনরে পরে রাত সাড়ে ৯ টার সময় ডা. হেলাল আহমেদকে বেলাবো থানাধীন নারায়নপুর এলাকায় রাস্তার পাশে চোখ বাঁধা অবস্থায় ফেলে দেয়। এ ঘটনায় ডা. হেলাল আহমদ বাদী হয়ে শিবপুর মডেল থানার একটি মামলা দায়ের করেন।
এ দুই ঘটনায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ প্রায় ৪৮টি সিসি ক্যামেরা ফুটেজ পর্যবেক্ষন সহ তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বিভিন্ন জায়গায় অভিযান সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী দলের চার সদস্যকে গাজীপুরের গাছা থানাধীন গাছা পূর্বপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ