আবারো লক্ষ্মীপুরের মেঘনার ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। নতুন করে রামগতি ও কমলনগর উপজেলার বড় অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদী তীর রক্ষা বাঁধে সরকারের ৩১০০কোটি টাকার কাজও রয়েছে বর্তমানে বন্ধ। এতে করে নদী তীরবর্তী লাখো মানুষ উৎকন্ঠায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন এখন। দ্রুত প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের দাবী জানিয়েছেন তারা। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ বালু সঙ্কট আর প্রবল স্রোতকে দায়ী করছেন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ভাঙছে নদী ধুলিস্যাৎ হচ্ছে মানুষের শেষ আশ্রয়। নদী তীরবর্তী বসিন্দারা নিমিষেই হচ্ছে পথের ফকির। চলতি বর্ষায় মেঘনার ভয়াবহ ভাঙনের শিকার হয়েছেন রামগতি ও কমলনগর উপজেলার বড় অংশ। হাট-বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সবই চলে গেছে নদীর পেটে। গত কয়েক বছর ধরেই অব্যাহত ভাঙনের শিকার হয়ে নিঃস্ব হয়েছেন এ দুই উপজেলার হাজার হাজার বাসিন্দারা। এমন প্রেক্ষাপটে গত বছর ৩১ কিলোমিটার নদী তীর রক্ষা বাঁধের জন্য সরকার ৩১০০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন করেন। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে চলতি বছরের ৯ জানয়ারি কাজও শুরু করা হয়। কিন্তু শুরুতে কিছু জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হলেও এখন বন্ধ রয়েছে প্রকল্পের কাজ। এতে করে এবারের বর্ষায় আবারো ভাঙনের কবলে পড়েছেন নদী পাড়ের বাসিন্দারা। নতুন নতুন এলাকার শত শত হেক্টর ফসলি জমি, স্কুল-মাদ্রাসা, হাট বাজার ও বসত ভিটা হারিয়েছেন তারা।
এমন একজন কমলনগরের চরফলকন এলাকার লাইজু আক্তার। স্বামীর অবর্তমানে ৩ সন্তান নিয়ে নিজের সহায় সম্বল ও শেষ আশ্রয় ভিটে-মাটি হারিয়েছেন এ নারী। তিন বারের ভাঙনের কবলে পড়ে শেষমেষ নদীর তীরে ঝুপড়ী ঘরে জীবন যুদ্ধে লড়ছেন। সেটিও এখন ভাঙনের মুখে। একই অবস্থা নদী পাড়ের বেশীরভাগ বাসিন্দাদের। ভাঙনের শিকার লাইজু ও তার প্রতিবেশী আবি আব্দুল্যাহসহ এসব অসহায় মানুষ ভাঙনের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরে সরকারি সহায়তা দাবি করেন। একই সঙ্গে নদী তীর রক্ষা বাঁধের কাজ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানান তারা।
তাদের অভিযোগ এ পর্যন্ত সরকারি বেসরকারি কোন সহায়তা পাননি। নদী ভাঙা মানুষদের বহু কষ্টে অর্ধাহারে অনাহারে জীবন যাপন করতে হচ্ছে বলে জানান তারা।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী ফারুক আহ্মেদ জানান, নদী তীর রক্ষা বাঁধ প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ডাম্পিং কাজের বালু পাওয়া যাচ্ছেনা। তাছাড়া বর্ষায় পানি বেড়ে যাওয়া আর প্রবল স্রোতের কারণে কাজ বন্ধ আছে। আশা করা যাচ্ছে এ মাসের শেষের দিকে আবারো প্রকল্পের কাজ শুরু করা যাবে। এতে রামগতি ও কমলনগরের মানুষ ভাঙন থেকে মুক্তি পাবে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ