পটুয়াখালীর গলাচিপায় আলিম পরীক্ষা কেন্দ্রের কক্ষে মুঠোফোন নিয়ে কক্ষে প্রবেশ করে দুই শিক্ষার্থী। পরীক্ষার শুরুতেই ওই পরীক্ষার্থীরা ফোনে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে বাইরে অপেক্ষমান কল্যাণকলস নেছারিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক রফিকুল ইসলামের কাছে পাঠিয়ে দেয়। তিনি প্রশ্নপত্রের উত্তর লিখে তা আবার হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের কাছে প্রেরণ করেন। এ ঘটনা জানাজানি হয়ে যায়।
এসময় কক্ষ পরিদর্শক দুই শিক্ষক বিষয়টি দেখেও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ওই দুই শিক্ষকসহ পটুয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. সাইফুল ইসলাম ওই কক্ষে গিয়ে হাতেনাতে মোবাইল জব্দ করেন।
এ ঘটনায় কল্যাণকলস নেছারিয়া আলিম মাদ্রাসার পরীক্ষার্থী মো. মুজাহিদুল ইসলাম, মো. সিয়াম ও গলাচিপা এন জেড মাদ্রাসার মো. শাহিন নামের এ তিনজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অপরদিকে প্রশ্নপত্র ফাঁসে সহযোগিতা করার অভিযোগে এন জেড মাদ্রাসার সহকারী সুপার মাও. মো. মাহমুদুল হাসান ও লামনা ছালেহিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আল আমিনকে এক ভ্রাম্যমাণ আদালত কারাদণ্ড দিয়েছেন। আরেক অভিযুক্ত কল্যাণকলস নেছারিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত মাহমুদুল হাসান ও আল আমিনকে শুক্রবার সকালে পটুয়াখালী জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, কালিকাপুর নূরিয়া ফাজিল মাদ্রাসা পরীক্ষা কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায় কল্যাণকলস নেছারিয়া আলিম মাদ্রাসার পরীক্ষার্থী মো. মুজাহিদুল ইসলাম ও মো. সিয়াম পরীক্ষা কক্ষে মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নপত্রের ছবি তুলে হোয়াটসঅ্যাপে বাইরে অপেক্ষমান কল্যাণকলস নেছারিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক রফিকুল ইসলামের কাছে পাঠিয়ে দেয়। তিনি প্রশ্নপত্রের উত্তর লিখে তা আবার পক্ষার্থীদের কাছে প্রেরণ করেন। এ ঘটনা জানাজানি হলে পটুয়াখালী জেলা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান ও গলাচিপা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. সাইফুল ইসলাম ওই কক্ষে গিয়ে হাতেনাতে মোবাইল জব্দ করেন। এর পর কক্ষ পরিদর্শক ও পরীক্ষার্থীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে সব তথ্য বেরিয়ে আসে। মুজাহিদুল ও সিয়ামকে প্রশ্ন ফাঁস এবং শাহিনকে অসদুপায় অবলম্বলের দায়ে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ঘটনায় সহযোগিতা করার অভিযোগে গলাচিপা নূতন জামে মসজিদ সংলগ্ন আলিম মাদ্রাসার সহকারী সুপার মাও. মো. মাহমুদুল হাসান ও লামনা ছালেহিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আল আমিনকে বৃহস্পতিবার রাত ৮টায় ভ্রাম্যমাণ আদালত এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুল ইসলাম জানান, গলাচিপা নূতন জামে মসজিদ সংলগ্ন আলিম মাদ্রাসার সহকারী সুপার মাও মো. মাহমুদুল হাসান ও লামনা ছালেহিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আল আমিনকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পলাতক কল্যাণকলস নেছারিয়া সিনিয়র মাদ্রাসার শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে। পরীক্ষার্থী ৩ জনকে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শোনিত কুমার গায়েণ বলেন, গ্রেফতারকৃত সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামিকে শুক্রবার সকালে পটুয়াখালী জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। অপর পলাতক আসামি রফিকুলকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল