ট্রেনের যাত্রী ভোগান্তি কমাতে নেত্রকোনা বড় স্টেশনের প্লাটফর্ম ও যাত্রী ছাউনি আধুনিকায়ন করে বর্ধিত করা হলেও দুর্ভোগ কমেনি যাত্রীদের। নারী বিশ্রামাগারসহ কোন বিশ্রামাগারই দিনে রাতে খোলা থাকে না। ফলে যাত্রীদের দুর্ভোগের যেনো শেষ নেই। বিশেষ করে নারী এবং রোগীদের। স্টেশনের পাবলিক টয়লেটটিও বছর জুরে থাকে তালাবদ্ধ। ভেতরে থাকে ভাঙ্গারির মালামাল। পাশের টিউবঅয়েলে নেই পানি।
দিনেরাতে দুটি ইন্টারসিটিসহ মহুয়া এবং লোকাল মিলিয়ে মোট ৫টি ট্রেনে প্রতিদিন দুর্ভোগ নিয়েই কয়েক হাজার যাত্রী চলাচল করেন ঢাকা-ময়মনসিংহ-নেত্রকোনা রুটে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ব্রিটিশ আমলে চালু হওয়া নেত্রকোনা রেলওয়ের বড় স্টেশনটি তেমন উন্নত না হলেও সময়ের দাবিতে যাত্রী ওঠা নামায় বর্ধিত হয়েছে প্লাটফর্ম। প্রথমে ২০১০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী এবং পরবর্তী ২০২১ সালের ১৫ অক্টোবর প্লাটফর্ম উন্নতকরণ, শেড নির্মাণসহ কিছু কাজ হয়েছে। দিনে দিনে কচ্চপ গতিতে প্লাটফর্ম উন্নত হলেও অপেক্ষারত যাত্রীদের দুর্ভোগ কমাতে স্থানীয়ভাবে কোনো উদ্যোগ নেই।
প্লাটফর্মে থাকা পাবলিক টয়লেট থাকে তালাবদ্ধ। ভেতরে আবর্জনাসহ ভাঙ্গারির দোকান। নষ্ট হচ্ছে ভেসিনসহ কোটি টাকার সম্পদ। রয়েছে বিশ্রামাগারের দুটি ছোট ছোট কক্ষ। তাও তালাবদ্ধ। মহিলা বিশ্রামাগার থাকলেও দূরের যাত্রীরা অপেক্ষমান অল্প সময়েও পান না সেবা। বিভিন্ন উপজেলা থেকে ঢাকায় চিকিৎসাগামী রোগীরাও প্লাটফর্মের পিলারের নীচে শুয়ে বসে থাকেন।
আন্ত:নগর দুটি ট্রেন দিনে রাতে চলাচল করলেও সেই ট্রেনের যাত্রীরাও স্টেশনের বেঞ্চে বসে থাকেন। কারো প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে গেলে পাশের মসজিদে যেতে হয়। নারী হলে মানুষের বাসা বাড়িতে যেতে হয়। এমন দুর্ভোগ নিয়ে নানা অভিযোগ করেন যাত্রীরা। টিউবওয়েল থাকলেও নেই পানি। চলতি রমজানে ইফতার করতেও পানির জন্য হাহাকার করতে হয় চলমান যাত্রীদের।
রাতের যাত্রীরা কখনো বিপদে পড়ে খুলে দেয়ার কথা বললে নোংরা হবে জবাব দিয়ে দেন চাবি হাতে থাকা রফিক নামের ব্যক্তি। এসকল নানা অনিয়ম অভিযোগের সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে রফিক নামের এক কর্মচারী লুকিয়ে পিছন থেকে খুলে দেন বিশ্রামগার। সাথে সাথেই এক ছেলে ধূমপান করতে বসে যান মহিলা বিশ্রাগারে। উল্টো অভিযোগ করেন যাত্রীদের বিরুদ্ধে।
এদিকে স্টেশন মাস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন পাবলিক টয়লেট ঠিক করার আশ্বাস দিয়ে বিশ্রামাগার যখন যার প্রয়োজন বললে খুলে দেয়া হয় বলে জানান। পাশাপাশি পরিছন্নকর্মী না থাকা এবং খুলে দিলে নেশাখোরদের আড্ডা চলে বলেও জানান। তবে যাত্রীদের সেবায় সতর্ক থেকে যখন ট্রেন সিগনাল পান তখন খুলে দেন বলেও দাবি করেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল