১ আগস্ট, ২০২৩ ১৬:৪৫

২৫ বছর ধরে ভাঙা ঘরে পাঠদান, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ

সরকার হায়দার, পঞ্চগড়

২৫ বছর ধরে ভাঙা ঘরে পাঠদান, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ

টিনের বেড়া, টিনের চাল। মেঝের ধুলো বালি উড়ছে সারা ক্লাসরুমে। ভাঙা বেড়ার ফাঁক দিয়ে দেখা যায় পুরোনো কাঠের বেঞ্চে বই-ব্যাগের সারি। দেখা যায় অমনোযোগী ক্লান্ত শিক্ষার্থীর চোখ। বহু পুরোনো বাঁশের বেড়ায় ঝুলছে আধময়লা ব্ল্যাকবোর্ড। এমন চিত্র দেখা গেছে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার কালিয়াগঞ্জ আদর্শ নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।

দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে ভাঙা টিনের ঘর আর কাচা মাটির ক্লাস রুমেই পাঠ দান চলছে এই বিদ্যালয়ে। নানা দুর্ভোগের মধ্যেই শিক্ষার্থীরা অধ্যায়ন করছে। শিক্ষার নিবিড় পরিবেশ না থাকার কারণে শিক্ষকেরাও পাঠ দানে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এই বিদ্যালয় থেকে দেড় থেকে দুই শতাধিক ছাত্রী পড়াশোনা করে আসছে। দশ জন শিক্ষক ও পাঁচ জন কর্মচারী পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। কিন্তু বিদ্যালয়েটিতে এখনো শিক্ষা বান্ধব পরিবেশ গড়ে ওঠেনি। একটি ভাঙা টিনের ঘরেই চলছে পাঠদান কার্যক্রম। স্কুলে পর্যাপ্ত চেয়ার-বেঞ্চ নেই। নেই অবকাঠামো। পর্যাপ্ত ব্ল্যাকবোর্ড নেই। মাটির মেঝেতে উড়ে ধুলোবালি। অনেক সময় চেয়ার বেঞ্চ ভেঙে পড়ে। শিক্ষার্থীরা জানান, ক্লাস রুমের ধুলোবালি নাকে চোখে প্রবেশ করে। এই পরিবেশে লেখাপড়ায় মন বসে না।

পরিবেশ না থাকলেও বিদ্যালয়ের পড়াশোনার মান ভালো বলে জানান স্থানীয় অবিভাবকরা। অভিভাবক আবু হানিফ জানান, খেলার মাঠ থাকলেও বাউন্ডারি ওয়াল নেই। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগেন শিক্ষার্থী এবং অবিভাবকরা।

শিক্ষকরা বলেন, বিদ্যালয়ে টয়লেট এবং ওয়াশ রুম রয়েছে মাত্র একটি। ওই টয়লটই ব্যবহার করতে হচ্ছে শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ কর্মচারীদের। এরকম অবস্থায় পাঠ কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের নির্বাচনী এলাকা হওয়ায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ কমিটির সদস্যরা তার কাছে ভবনের জন্য আবেদন করলে রেলমন্ত্রী আগে খাওয়ার ব্যবস্থা করতে বলেছেন বলে জানান প্রধান শিক্ষক। 

প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম জানান, প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিনা বেতনে স্কুল চালিয়ে এসেছি। কোনো দিন বন্ধ হয়নি। ২০২২ সালে এমপিও ভুক্ত হওয়ার পর কিছুটা স্বস্তি পেলেও প্রত্যেক শিক্ষকই ঋণগ্রস্থ। অমানবিক জীবনযাপনের মধ্য দিয়েও পাঠ দান করছি। বিদ্যালয়ে ভবন নেই। প্রয়োজনীয় উপকরণও নেই। নানা সংকটের মধ্য দিয়ে পাঠদান চলছে।

ওই বিদ্যালয়ে জরুরী ভবন নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে দাবি করে জেলা শিক্ষা অফিসার শাহীন আকতার বলেন, ভবনের অভাবে আরও বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ের পাঠ কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। এসব বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মিত হলে শিক্ষার মান বাড়বে।

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর