গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে জামায়াত কর্মী শাহবুল ইসলামকে হত্যা মামলায় শাহাবুদ্দিন মন্ডল (৫০) নামের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রবিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ। এরআগে গত শনিবার অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার শাহাবুদ্দিন মন্ডল উপজেলার সর্বানন্দ ইউনিয়নের উত্তর সাহাবাজ এলাকার মৃত শামস উদ্দিনের ছেলে। তিনি ওই ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি।
মামলার বরাত দিয়ে ওসি জানান, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াত কর্মী শাহাবুল ইসলাম ও মিজানুর রহমান ভোট দিতে উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের মনমথ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে যান। এসময় ভোটকেন্দ্রের বাইরে তাদেরকে দেখে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। সেই সময় মামলার আসামিসহ অজ্ঞাত পরিচয় ৪০ থেকে ৫০ জন দেশি অস্ত্র নিয়ে মিজানুরের ওপর হামলা চালায়। নিজেকে বাঁচাতে একটি বাঁশঝাড়ে আশ্রয় নেন মিজানুর। পরে আসামিরা তাকে ঘিরে ধরে হত্যার উদ্দেশে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকেন। সেই সময় মিজানুরকে রক্ষা করতে শাহাবুল এগিয়ে যান।
একপর্যায়ে আসামিরা দেশি অস্ত্র দিয়ে শাহাবুলকেও এলোপাতাড়ি আঘাত করেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। আসামিরা উপর্যুপরি কুপিয়ে শাহাবুলের মৃত্যু নিশ্চিত করেন। সেইসঙ্গে গুরুতর আহত মিজানুরকে মৃত ভেবে আসামিরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যান।
পরে আশেপাশের লোকজন শাহাবুল ও মিজানুরকে উদ্ধার করে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক শাহাবুলকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া গুরুতর আহত মিজানুরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুরে পাঠানো হয়।
এ ঘটনার দীর্ঘ ১০ বছর গেলেও নিহতের পরিবারের লোকজন মামলা করতে পারেনি। অবশেষে গত ৫ আগষ্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর সাড়ে ১০ বছর পর নিহতের ছোট ভাই শাহজাহান কবির বাদী হয়ে চলতি বছর ২২ অক্টোবর মামলা দায়ের করেন। মামলায় গাইবান্ধা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নিহত মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের স্ত্রী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সৈয়দা খুরশিদ জাহান স্মৃতিসহ ৭৯ জনের নাম উল্লেখ করে এতে অজ্ঞাত ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামি করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/এএম