ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ফেনী অংশে রেললাইন পারাপার যেন এক মৃত্যুঝুঁকির খেলায় পরিণত হয়েছে। কেউ অসচেতনভাবে হাঁটতে গিয়ে, কেউবা মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে রেললাইনে কাটা পড়ে প্রাণ হারাচ্ছেন।
গত মাসেই ফেনীর গুদামকোয়াটার রেলগেইট এলাকায় ১০ দিনের ব্যবধানে ৬০-ঊর্ধ্ব দুই বৃদ্ধ নিহত হন। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত এক বছরে এ রুটে প্রায় ২৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
ফেনীর শর্শদী থেকে মুহুরীগঞ্জ পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথে রয়েছে ২২টি অনুমোদিত ও ১২টি অনুমোদনহীন রেলক্রসিং। এসব অননুমোদিত ক্রসিংয়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে মুহুরীগঞ্জে—৬টি। বাকিগুলো রয়েছে শর্শদী, দেওয়ানগঞ্জ ও ফাজিলপুরে।
গাড়িতে বসে ব্যারিয়ার উঠার অপেক্ষায় থাকা স্থানীয় বাসিন্দা জসিম উদ্দিন (৫৫) বলেন, “কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় মানুষ ঝুঁকি নিয়েই রেলগেট পার হন। যদি সচেতনতা বাড়ানো হতো বা আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হতো, তাহলে দুর্ঘটনার সংখ্যা অনেক কমে যেত।”
ফেনী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মুহাম্মদ রায়হান উদ্দিন বলেন, “ওভারব্রিজ না থাকায় আমাদের প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিতে হয়। সরকার চাইলে এসব জায়গায় ওভারব্রিজ করে নিরাপদ পারাপার নিশ্চিত করতে পারে।”
পথচারী মিরাজ আহম্মদ জানান, “ব্যারিয়ার নামানোর হুইসেল বাজলেও রিকশা ও ভাড়ায়চালিত যানবাহন রেললাইনের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। এমনকি অনেক সময় বন্ধ রেলগেটের ফাঁকা দিয়ে অবাধে পার হয় যানবাহন।”
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, “অনুমোদনহীন এসব রেলক্রসিং প্রতিনিয়ত নতুন করে তৈরি হচ্ছে। মুহুরীগঞ্জ এলাকাতেই ৬টি অননুমোদিত ক্রসিং রয়েছে। এগুলোর অনেকগুলো বন্ধ করে দেওয়া হলেও মানুষ আবার নতুন রাস্তা তৈরি করে, যা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।”
বিডি প্রতিদিন/আশিক