কুমিল্লায় কুটির শিল্প ও বাণিজ্য মেলার নামে জেলা জুড়ে চলছে জুয়ার আসর। প্রতিদিন র্যাফেল ড্র‘র নামে পাঁচটি রঙের ২০ টাকা মূল্যের টিকিট বিক্রি চলছে জেলার সর্বত্র। প্রতিদিন অর্ধকোটি টাকার টিকিট বিক্রি হচ্ছে। রাত সাড়ে ১০টায় বই-খাতা রেখে মোবাইল ফোন সেটের সামনে বসে পড়েন শিক্ষার্থীসহ নিম্ন আয়ের মানুষ। একেকজন এক থেকে দেড়শ টিকেটও ক্রয় করছেন। এতে অনেকেই সর্বস্বান্ত হচ্ছেন।
সূত্র জানায়, গত ২৪ এপ্রিল নগরীর জাঙ্গালিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মেলার উদ্বোধন করা হয়। চলবে আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত। মেলা শুরুর প্রথম দিকে মাইকিং করে নগরীসহ বিভিন্ন উপজেলায় টিকেট বিক্রি করা হয়। এখন পায়ে হেটে নগরীর অলি-গলি, স্কুল-কলেজের সামনে, গ্রামের পাড়া-মহল্লায় ও হাট-বাজারে বসে চলছে টিকেট বিক্রি। মোটরসাইকেল, টিভি, ফ্রিজ, ল্যাপটপ, স্বর্ণসহ বিভিন্ন পুরস্কারের বিজ্ঞাপনে ক্রেতাদের মনোযোগ আকর্ষণ করা হচ্ছে। ফেসবুক, ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে সরাসরি সম্প্রচার।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে টিকেট বিক্রেতাদের একজন বলেন, মেলা শুরু থেকে বিভিন্ন স্থানে ২৫০-৩০০ কর্মী লটারীর টিকেট বিক্রি করে আসছেন। বিনিময়ে তাদেরকে ১২-১৫শ’ টাকা হাজিরা দেয়া হয়। টার্গেটের বেশি বিক্রি করতে পারলে বোনাসও দেওয়া হয়। প্রতিজনে গড়ে ৮শ’ থেকে ১ হাজার টিকেট বিক্রি করেন। সে হিসেবে একদিনে টিকেট বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০লাখ টাকার।
কুমিল্লা কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ মো. হুমায়ুূন কবীর মাসউদ বলেন, লটারির নামে শহর-গ্রামের অলিতে-গলিতে র্যাফেল ড্র-এর নামে বিক্রি করছে জুয়ার টিকেট। চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে সারাদিন রিকশা, ভ্যান চালিয়ে নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষের সর্বশেষ সম্বলটি লুটে নিয়ে যাচ্ছে। সন্ধ্যার পর আনন্দ ফুর্তির নামে স্কুল-কলেজের কোমলমতি শিক্ষার্থীরাও জড়িয়ে পড়ছে আড্ডা আর গ্যাংয়ের নামে নানান অপকর্মের সঙ্গে। প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ এখনই এর লাগাম টানুন।
এ বিষয়ে জানতে র্যাফল ড্র-এর দায়িত্বে থাকা মাহাবুবুর রহমানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কুমিল্লা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, মেলার বাইরে লাটারির নামে যদি টিকেট বিক্রি হয় অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুযোগ আছে। খোঁজ নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল