গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় মাদ্রাসার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে আট বছরের এক ছাত্রকে বেধড়ক মারধর করে হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রবিবার (১ জুন) উপজেলার তারাশী-পবনাড়পাড় এলাকার মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানায় এই ঘটনা ঘটে।
আহত ছাত্রের নাম হামিম শেখ (৮)। সে উপজেলার গোপালপুর গ্রামের রুহুল আমিন শেখের ছেলে। বর্তমানে সে নানা বাড়িতে শয্যাশায়ী অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। মারধরের ফলে তার লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে পরিবার।
পরিবার ও মাদ্রাসা সূত্রে জানা যায়, ওই দিন মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মো. ইব্রাহিম খলিলুর রহমান হেফজ বিভাগের শিক্ষার্থী হামিমকে পড়া জিজ্ঞেস করেন। কিন্তু উত্তর দিতে না পারায় তিনি বেত দিয়ে পেটাতে শুরু করেন এবং একপর্যায়ে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। এতে হামিমের বাম হাত ভেঙে যায়। পরে তাকে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা হাত ভেঙেছে বলে নিশ্চিত করেন এবং প্লাস্টার করেন।
ভুক্তভোগী হামিম শেখ অভিযোগ করে বলেন, হুজুর আমাকে অনেকবার পিটিয়েছে। পড়া না পারলে শুধু আমাকেই না, সবাইকেই মারধর করে। আমাকে বলে দিয়েছিল বাড়িতে কিছু বলতে না। তাই এতদিন কিছু বলিনি। এবার মারধরের পর হাত ভেঙে গেছে, তাই বলছি।
হামিমের নানী সোনাই বেগম বলেন, আমি ওর জন্য খাবার নিয়ে মাদ্রাসায় গিয়ে দেখি এক কোণে কাঁদছে। জিজ্ঞেস করলে শিক্ষক বলেন পড়ে গেছে। পরে বাড়ি নিয়ে এসে দেখি সারা শরীরে বেতের দাগ, আর হাত ফুলে আছে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার হাত ভাঙার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক ইব্রাহিম খলিলুর রহমানের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তিনি মাদ্রাসায় উপস্থিত ছিলেন না। তবে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মাদ্রাসার মোহতামিম হাফেজ মুফতি আব্দুল্লাহ আল হাফিজ বলেন, হামিমকে শাসনের নামে শিক্ষক অতিরিক্ত শাস্তি দিয়েছেন, যা অন্যায়। আমরা বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি। মঙ্গলবার মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির জরুরি সভা ডেকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল