উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়হীনতায় খুলনা নগরীতে প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থ অপচয় বাড়ছে। খুলনা সিটি করপোরেশনের ৬৬০ কোটি ৫৬ লাখ ব্যয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামত উন্নয়ন প্রকল্প শেষ হচ্ছে ৩০ জুন। শেষ মুহূর্তে তারা মজিদ সরণি, কেডিএ অ্যাপ্রোস রোড ও ইসলামপুর রোডের প্রশস্ততা ও সংস্কারের কাজ করছে। সড়কে এসব কাজে আপত্তি জানিয়েছে খুলনা ওয়াসা। ওয়াসার কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে এসব সড়কে পয়োনিষ্কাশন প্রকল্পে পাইপলাইন স্থাপন করা হবে। কেসিসি এখন রাস্তা সংস্কার করলে সেই নতুন রাস্তাই আবার কাটতে হবে। ফলে সরকারের অর্থ অপচয় বাড়বে। ২ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ওয়াসার ‘পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পে’র কাজ শেষ হবে চলতি বছরের ডিসেম্বরে।
এদিকে কেসিসি এরই মধ্যে পয়োনিষ্কাশন পাইপলাইন স্থাপনে রাস্তা খননের ক্ষতিপূরণ বাবদ ওয়াসার কাছে ৩৭৮ কোটি ৯২ লাখ টাকা দাবি করেছে। ওয়াসা চারটি চেকের মাধ্যমে কেসিসিকে ১১০ কোটি টাকা দিয়েছে। দাবিকৃত বাকি টাকার জন্য বিস্তারিত হিসাব চেয়েছে খুলনা ওয়াসা।
নাগরিক নেতারা বলছেন, কেসিসি ৬৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে যে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা মেরামতে কাজ করছে, আবার একই রাস্তায় ওয়াসার খোঁড়াখুঁড়িতে ৩৭৮ কোটি ক্ষতিপূরণও দাবি করেছে। দুই প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়হীনতায় এভাবে উন্নয়ন প্রকল্পের বিপুল পরিমাণ টাকা অপচয় হচ্ছে।
খুলনা ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খান সেলিম আহম্মদ বলেন, আমরা কেসিসির কাছে অনুরোধ করেছি মজিদ সরণি, কেডিএ অ্যাপ্রোস রোডসহ পাঁচটি রাস্তার দু-তিন মাস দেরিতে মেরামত কাজ করার জন্য। আমাদের কিছুটা সময় দিলে সেখানে পয়োনিষ্কাশন পাইপ বসানোর কাজ শেষ করা হবে।
তারপর কেসিসি সংস্কার কাজ করলে অর্থ অপচয় হবে না। নতুবা দু-তিন মাসের মধ্যে সে নতুন রাস্তা কেটে পাইপ বসাসোর কাজ করতে হবে। কেসিসির প্রধান প্রকৌশলী মশিউজ্জামান খান বলেন, ৩০ জুনের মধ্যে কেসিসির রাস্তা মেরামত প্রকল্পের কাজ শেষ হচ্ছে। কিন্তু ওয়াসা ৫টি রাস্তায় মেরামত কাজে আপত্তি জানাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে দুই প্রতিষ্ঠানের প্রশাসক পর্যায়ে আগামী সপ্তাহে বৈঠক ডাকা হয়েছে। তিনি বলেন, পাইপ বসানোর জন্য ওয়াসা ৬-৭ ফিট গভীর করে রাস্তা খনন করলে শুধু ওই অংশই নয় পুরো রাস্তাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে তাদের কাছে রাস্তা খননে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৩৭৮ কোটি টাকা দাবি করা হয়েছে। সচেতন নাগরিকদের সংগঠন খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, দুই প্রতিষ্ঠানে সমন্বয়হীনতায় হিসাব অনুযায়ী রাস্তা মেরামতে কাজে এখন ব্যয় হচ্ছে কেসিসির ৬৬০ কোটি ও ওয়াসার ৩৭৮ কোটি টাকা। যা সমন্বয়ে মাধ্যমে অর্ধেকের বেশি অপচয় কমানো যেত।